ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

পাকিস্তান ভাঙার কারণেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা: মুনতাসীর মামুন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২২
পাকিস্তান ভাঙার কারণেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা: মুনতাসীর মামুন

ঢাকা: পাকিস্তান ভাঙার কারণেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন। জেল হত্যা দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর সচিবালয় সংলগ্ন পরিবহন পুলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে মুনতাসীর মামুন বলেন, পাকিস্তানিকরণ ধর্মের নামে রাজনীতির মাধ্যম হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর জিয়াউর রহমানের হাত ধরে সামরিক শাসকদের মাধ্যমে পাকিস্তানিকরণ হয়েছে। ৩৬ জেলায় সাড়ে ১৬ হাজার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এক হাজারের বেশি গণকবর রয়েছে।

এ সময় ‘পাকিস্তান ভাঙার কারণেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন মুনতাসীর মামুন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে কারণ বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান ভেঙেছেন। প্রতিশোধ নিতেই এ ন্যক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার মুনতাসীর মামুন আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের কাজ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আওতায় পড়ে। কিন্তু এটা খুব বেশি দেখা যায় না। খুলনায় সবচেয়ে বড় সড়কের নাম ছিল খান এ সবুরের মতো একজন স্বাধীনতা বিরোধীর নামে। ওখানকার আমলা-মন্ত্রীরা কেউই খান এ সবুরের নাম সরাননি। আমাকে হাইকোর্ট-সুপ্রিমকোর্ট করে সেই নাম সরাতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তাকে বলেছিলাম, এই এমপি-আমলারা কেউ আপনার নয়।

অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন এডিটরস গিল্ডের সভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু। তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, ৩ নভেম্বর জেলের অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা ও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা একইসূত্রে গাঁথা।

মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা সম্পর্কে তিনি বলেন, ২৬ মার্চের আগেই মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা রেডি করে রেখেছিলাম। ২৬ মার্চের প্রথম লগ্নেই বলধা গার্ডেন থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করা হয়। এরপর চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা এমএ হান্নানসহ অন্যরা তার পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেন। ঘটনাক্রমে অন্যদের মতো জিয়াউর রহমানও স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে।

অনুষ্ঠানে জাতীয় চার নেতার অবদান নিয়ে তিনি বলেন, তাদের মুজিবনগর সরকার একটি নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক সরকার। মুজিবনগর সরকারের অর্থনৈতিক উইং, প্রশাসনিক উইং, কূটনৈতিক উইং ছিল। কূটনৈতিক উইং সারাবিশ্বে বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করে গিয়েছে। জিয়াউর রহমানের মতো সামরিক অফিসাররা ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা বেতন পেতো মুজিবনগর সরকারের কাছে থেকে।

জাতীয় চার নেতার জীবনদান সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা বঙ্গবন্ধুর রক্তের ওপর দিয়ে মোশতাকের হাত ধরে ক্ষমতায় যাননি। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মুজিববাদের ওপর ভিত্তি করে। জাতীয় চার নেতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে কখনো সরে যাননি। মোশতাক অনেকদিন বেঁচে ছিল; কিন্তু ঘৃণাভরে বেঁচে ছিল। কিন্তু অন্যরা অল্পদিন বেঁচে থাকলেও চির অমর হয়ে থাকবেন।

জেল হত্যা দিবস ২০২২ উদযাপন অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২২
এনবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।