ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

হ্যান্ডমাইকে নির্দেশনায় চলছে বিমানবন্দর সড়কে চলাচল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২২
হ্যান্ডমাইকে নির্দেশনায় চলছে বিমানবন্দর সড়কে চলাচল হ্যান্ডমাইকে যানবাহন চলাচলের নির্দেশনা দিচ্ছেন সিজিজিসি’র কর্মীরা

ঢাকা: কোথাও গাড়ি দাঁড় করাবেন না, পার্কিং করবেন, সোজা চলে যাবেন। যারা ডানে যাবেন তারা ডানেই ঢুকবেন, যারা বামে যাবেন তারা বামে ঢুকবেন।

মাঝের খালি জায়গাতে দাঁড়াবেন না। পথচারীরা সাবধানে রাস্তা পারাপার করবেন। ঝুঁকি নিয়ে সড়কে দৌড়াবেন না।  

হ্যান্ডমাইকে এভাবেই নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে। আর সে অনুযায়ী চলছে যানবাহন। কোনো বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সেজন্য নজরদারিও করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।  

সড়কের একেবার মাঝের অংশে চলছে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের সড়ক নির্মাণ কাজ। আর তাই বিআরটি প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসি’র কর্মীরা জনস্বার্থে হ্যান্ডমাইকে সড়কে চলাচলের এমন নির্দেশনা বলছেন।  

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিমানবন্দর অংশে সড়কের মাঝে প্রায় ৫০০ মিটার বন্ধ রেখে নির্মাণ কাজ চলছে। ব্যস্ততম এই সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের যাতায়াতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে তাই বিকল্প পথ চালু রেখেছে বিআরটি প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসি।  

বেরিকেট দিয়ে দুই পাশে তিনটি লেন দিয়ে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে যানবাহন।  

এ নির্মাণ কাজের কারণে গাজীপুর থেকে ঢাকাগামী সড়কে যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ দেখা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক উত্তরা বিভাগের দায়িত্বরত সদস্যরাও সড়কের যানবাহনের চাপ কমাতে কাজ করছেন।  

শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সকাল থেকে বিমানবন্দর এলাকায় সড়কে ঘুরে সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা যায়৷ 

শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, বিমানবন্দর এলাকার গাজীপুর থেকে ঢাকাগামী সড়কে অবস্থিত সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে বিমানবন্দর পুলিশ চেকপোস্ট পর্যন্ত ৫০০ মিটার সড়কের মাঝের অংশ বেরিকেট দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে।  

তবে এই বেরিকেট দেওয়া অংশের দুই পাশে বিকল্প ব্যবস্থায় চলাচল করছে যানবাহন। মাঝের অংশে চলছে সড়ক নির্মাণ কাজ। ইতিমধ্যে সড়কে ২৫০ মিটার অংশে পাথর ও সিলেকশন বালু ফেলে তা লেভেলিং ও রোলিংয়ের কাজ শেষ৷ বর্তমানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লেবাররা শলার ঝাড়ুর সাহায্যে তা পরিষ্কার করছেন৷ সেই সঙ্গে বাকি অংশেও লেভেলিং ও রোলিংয়ের কাজ চলছে।  

সড়কে যানচলাচলে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয় সেজন্য পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ ছাড়াও বিআরটি প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ট্রাফিক টিম কাজ করছে। তাদের কেউ হ্যান্ড মাইকে নির্দেশনা দিয়ে চলছে আবার কেউ হাতে সিগন্যাল সম্বলিত পতাকা নেড়ে সড়কে যানবাহন চলাচলের সিগন্যাল দিয়ে চলেছেন।  

তবে ঢাকা থেকে গাজীপুর মুখী সড়কে যানবাহনের খুব একটা চাপ থাকতে দেখা যায়নি।  

বিআরটি প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসি’ প্রকল্প ইঞ্জিনিয়াররা বলছেন, বৃহস্পতিবার থেকে এই সড়কের আংশিক বন্ধ রেখে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। আগামী ২৭ নভেম্ব) ভোর ৬টা নাগাদ এই কাজ শেষ হবে।  

এরপর সড়কটি চলাচলের উপযোগী হবে বলেও আশা প্রকাশ করছেন তারা।

এবিষয়ে জানতে চাইলে সিজিজিসি’র প্রকল্প ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এই সড়কের আনুমানিক ৫০০ মিটারের কাজ চলছে। গতকাল সন্ধ্যা থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। আগামী ২৭ নভেম্বর ভোর ৬ টা পর্যন্ত আমাদের কাজ চলবে। এরপর সড়কের এই অংশ যানচলাচলের জন্য ছেড়ে দিয়ে গাজীপুর থেকে ঢাকাগামী অংশের বামপাশের সড়কের উন্নয়নমূলক কাজ চালানো হবে।  

তিনি বলেন, সড়কের মাঝের অংশ বন্ধ রাখার কারণে আমরা দুই পাশে তিনটি লেন চালু রেখেছি। এই তিনটি লেনে যানবাহন যাতে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে সেই লক্ষ্যে আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ট্রাফিক টিম কাজ করছে। সড়কে যানবাহনের চাপ আরও বেড়ে গেল প্রয়োজন বোধে ট্রাফিক টিমে আরও লোকবল বাড়ানো হবে। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরাও আমাদের সহযোগিতা করছে।  

সিজিজিসি’র ফোরম্যান মোহাম্মদ মামুন বলেন, রোববারের মধ্যে আমাদের কাজ শেষ করতে হবে। তাই দ্রুততার সঙ্গে আমাদের কাজ চলছে। কাজের গতি বাড়াতে লোকবল বাড়ানো হচ্ছে।  

কীভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে সড়কটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিচে আগের কার্পেটিং রয়েছে। তার উপর পাথর ও সিলেকশন বালু ফেলে লেভেল করা হয়েছে। এরপর ৪২ টন ওজনের হেভি রোলার দিয়ে রোলিং করা হয়েছে। এখন পরিষ্কার করা হচ্ছে। আজ রাতে এর উপর পিচ/বিটুমিন দিয়ে কার্পেটিং করা হবে। এই সড়ক চলাচলে অনেক টেকসই হবে।  

এদিকে পথচারীদের কাছে সড়কের বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তারা জানান, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বলছে, সড়ক হেবি হচ্ছে। কিন্তু একটু বৃষ্টি হলেই সড়কে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্ত হয়ে যায়।  

সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. নুর মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ঠিকাদাররা তো রাস্তা ভালই বানায়, কিন্তু বৃষ্টিতে পানি জমলেই রাস্তা শেষ। তারা পাথর দিলে পিচ দেয় কম। ইট-বালু দিলে সিমেন্ট দেয় কম, তাইলে কিভাবে রাস্তা টিকব। বৃষ্টি হইলেই রাস্তার পাথর খইয়া খইয়া যায়।

এরা আগে গত ২৩ নভেম্বর বিমানবন্দর এলাকায় যান চলাচল স্থায়ীভাবে নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে বিআরটি প্রকল্পের সড়কের উন্নয়ন কাজ চলমান রাখার কারণে জনসাধারণের জন্য বিশেষ ট্রাফিক নির্দশনা জারি করা হয়।  

বিআরটি’র প্রকল্প পরিচালক এএসএম ইলিয়াস শাহ্ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ২৭ নভেম্বর সকাল ৬ টা পর্যন্ত ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সড়কের উন্নয়ন কাজ চলমান থাকবে। এজন্য যানজট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই সময় পর্যন্ত চলাচলরত জনসাধারণ ও পরিবহনকে সম্ভাব্য বিকল্প পথ ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা ১৪২১, নভেম্বর ২৫, ২০২২
এসজেএ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।