ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়ার ঘড়ি

ফজলুল বারী, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১১
এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়ার ঘড়ি

ডে লাইট সেভিংস ফর্মুলায় রোববার ২ অক্টোবর থেকে অস্ট্রেলিয়ার ঘড়ির কাঁটা আবার একঘণ্টা এগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থা চলবে আগামী বছরের পহেলা এপ্রিল অবধি।

ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে দেবার কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সময়ের ব্যবধান দাঁড়াল আবার ৫ ঘণ্টা। গ্রীষ্মে সানলাইটকে কাজে লাগিয়ে কর্মঘণ্টা বাড়াতে প্রতিবছর এভাবে অক্টোবরে ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে নেওয়া হয় অষ্ট্রেলিয়ায়। এমন নিয়ম অবশ্য অনেক পশ্চিমা দেশেও চালু আছে। বাংলাদেশে কাজের সংস্কৃতি চালু না হওয়াতে ডে লাইট সেভিংস একবার চালু করেও কাজে দিচ্ছে না দেখে পরে তা বাতিল করা হয়। বাংলাদেশের অনেক বুদ্ধিজীবীও ডে লাইট সেভিংসকে সমর্থন দেননি।

বাংলাদেশের মানুষজনের জন্যে আজ অস্ট্রেলিয়ার আরেকটি মজার তথ্যও আছে। প্রশান্তপাড়ের দেশটির একাধিক রাজ্যে আজ উদযাপিত হচ্ছে মে দিবসের ছুটি। এদেশে দিনটির নাম অবশ্য লেবার ডে। পহেলা মে দুনিয়ার প্রায় সব দেশে মে দিবসের ছুটি থাকে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার রাজ্যে রাজ্যে এমন ছুটি তখন না নিয়ে পরবর্তি কোন শনি-রবিবারের সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে তিনদিনের লম্বা সাপ্তাহিক ছুটি করে নেওয়া হয়। যেমন আজ সোমবার মে দিবসের তেমন ছুটি উদযাপিত হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল টেরিটোরি (ক্যানবেরা) আর সাউথ অস্ট্রেলিয়ায়। অন্য রাজ্যগুলো যার যার সুবিধামতো মে দিবসের ছুটি উদযাপন করেছে।

এমনিতে আর সব দেশ-জাতির মতো অস্ট্রেলিয়ানরাও ছুটির কাঙ্গাল! কারণ খুব বেশি পাবলিক হলিডে তাদের নেই। বছরে সব মিলিয়ে পাবলিক হলিডে এদেশে ১১/১২ দিন। বাংলাদেশের কথায় কথায় হরতাল ছুটিও (!) নেই অস্ট্রেলিয়ায়! এরমধ্যে শুধু নিউইয়ার, অস্ট্রেলিয়ার ডে, গুড ফ্রাইডে, ইস্টার মানডে, এনযেক ডে, ক্রিসমাস, বক্সিং ডের ছুটিগুলোই সারাদেশে একসঙ্গে পালিত হয়। রানীর জন্মদিনসহ কয়েকটি ছুটি রাজ্যগুলো নিজেদের সুবিধামতো পালনের ক্যালেন্ডার করে নেয়।

সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে পাওনা পাবলিক হলিডে মিলিয়ে তিনদিনের ছুটি উপভোগে অনেকে পরিবার-পরিজনসহ চলে যান দূরে কোথাও বেড়াতে। যেমন এই সোমবারে পাবলিক হলিডে থাকায় সিডনিতে আজ একাধিক পুজা হচ্ছে। এদেশে অবশ্য কোন একটি পাবলিক হলিডে দেখে একদিনে দুর্গাপুজা হয়। পুজার পর এখানে প্রতিমা বিসর্জন হয় না। প্রতিমা ভাগ ভাগ করে খুলে প্যাকেট করে পরবর্তি বছরের পুজার জন্য রেখে দেয়া হয়।

অস্ট্রেলিয়া যারা রোববারসহ পাবলিক হলিডেতে কাজ করেন তারা বাড়তি মজুরি পান। সাধারণ হিসাবের চেয়ে এ মজুরি আড়াইগুণ। অর্থাৎ যার মজুরি ঘন্টার ২০ ডলার আজ সোমবারের কাজের জন্য কর কাটার আগে তারা ঘন্টায় ৫০ ডলার করে গুনবেন। অর্থাৎ আজ তাদের ১২ ঘন্টার শিফট মানে ৬০০ ডলার! তবে এ টাকা থেকে কর কাটা হবে কমপক্ষে ৩৫%। অস্ট্রেলিয়ায় যারা নগদ টাকায় বা ক্যাশে কাজ করেন তারা অবশ্য এসব পাবলিক হলিডের বাড়তি পেমেন্ট পান না। বিশেষ করে, এদেশে পড়তে আসা বিদেশি ছাত্রদের বেশিরভাগ ঘন্টায় ১০-১৫ ডলার মজুরিতে ক্যাশে কাজ করতে হয়।

ফজলুল বারীঃ সিডনি প্রবাসী সাংবাদিক।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।