ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

শেখ হাসিনার হাতে বদলে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ

ওয়াহিদা আক্তার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২০
শেখ হাসিনার হাতে বদলে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ

সব্যসাচী লেখক ও কবি সৈয়দ শামসুল হকের লেখা ‘আমার পরিচয়’ কবিতাটি অনন্তকাল বেঁচে থাকবে আমার হৃদয়ে আমার পরিচয় হিসেবে। কবিরা স্বপ্নদ্রষ্টা; ভবিষ্যদ্দ্রষ্টা হন, স্বপ্ন দেখেন; স্বপ্ন দেখান কবিতায়, লেখায়।

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় কবি। তিনি লিখেছেন, ‘বিশ্ব জগৎ দেখব আমি আপন হাতের মুঠোয় পুরে। ’ আজ এর চেয়ে বাস্তবতা আর বোধহয় নেই। প্রায় সবার হাতে স্মার্টফোন। বিশ্বকে তারা আপন হাতের মুঠোয় নিয়ে দেখছে। কী দেখছে! কোন বিষয়টি তাদের আকর্ষণ করছে! তা তাদের মনোজগতে কী প্রভাব ফেলছে! যা দেখছে বা শুনছে তা সত্য না মিথ্যা, ঔচিত্যবোধের মাপকাঠিতে যাচাই করার অবকাশ আছে কিনা তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। ২০২০ সালের শুরু থেকে এই করোনা মহামারীর কারণে সমগ্র বিশ্ব যখন প্রযুক্তির মাধ্যমে চলছে তখন ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে অনলাইনভিত্তিক সব দাফতরিক কার্যক্রমসহ চিকিৎসা কার্যক্রম, কৃষিপণ্য কেনাবেচা ও ভোগ্যপণ্য সরবরাহ চেইন কখনো বিচ্ছিন্ন হয়নি। প্রযুক্তির কল্যাণে ভার্চুয়াল অংশগ্রহণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বের সঙ্গে সমানতালে পা মিলিয়ে চলছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। আবার এ প্রযুক্তির অপব্যবহারে সমাজে মিথ্যা প্রচার, আকাশ সংস্কৃতির ঢেউ মানুষের মনে, তরুণ প্রজন্মের মনের ওপর কী প্রভাব ফেলেছে তা সমাজবিজ্ঞানীদের গবেষণার বিষয় হতে পারে। কারণ ভ্রমটাকে রুখতে যদি দ্বার বন্ধ করে রাখি তবে সত্য ঢোকার পথ হয়তো পাবে না। এখানে হারানো মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনার দাবি এসে যায়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি বলা হয়। তিনিও স্বপ্নদ্রষ্টা ও ভবিষ্যদ্দ্রষ্টা ছিলেন। তিনি ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি যুদ্ধবিধ্বস্ত ৩০ লাখ শহীদের রক্তে ভেজা মাটিতে পা দিয়ে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। তাঁর ভালোবাসার সাড়ে ৭ কোটি বাঙালিকে অশ্রুসিক্ত নয়নে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় খেতে ফসল উৎপাদন হয়নি, রিজার্ভ ছিল না, রাস্তা-কালভার্ট, পুল-ব্রিজ ভাঙা ছিল। ১ কোটি মানুষ শরণার্থী, ৩ কোটি মানুষ ঘর-বাড়িহারা, স্বজনহারা মানুষের আহাজারি, শত শত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, ২ লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোন। এত অল্প সময়ে শরণার্থীদের পুনর্বাসন, আহত-নিহত মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবারদের আর্থিক সহায়তা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান ছিল কঠিন কাজ। বিশ্বে তখন অর্থনৈতিক মন্দা, দেশে দেশে যুদ্ধ চলছে এর মধ্যে সদ্য স্বাধীন একটি দেশের স্বীকৃতি অর্জন; আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ, সর্বোপরি দেশ পরিচালনার জন্য মৌলিক সংবিধান প্রণয়ন।

বাংলাদেশ ছিল একটি প্রদেশ। একটি প্রদেশকে দেশ হিসেবে গড়ে তোলার সব ভিত্তি যুদ্ধ-পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর সরকার অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে স্থাপন করেছিল। আজ এমন কোনো সেক্টর পাওয়া যায় না যেখানে তিনি মাত্র সাড়ে তিন বছর সময়ের মধ্যে হাত দেননি। ভৌগোলিক সীমা রক্ষার্থে সীমান্ত আইন, সমুদ্রসীমা অটুট রাখতে সমুদ্র আইন তিনি প্রণয়ন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু বলতেন ‘ভিক্ষুক জাতিকে কেউ সম্মান করে না। ’ তাই তিনি দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে দেশ গঠনে উদ্যোগী হন।
আজ বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশের দিকে যাত্রা করেছে। আজ বাংলাদেশ নিজ অর্থেই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। অন্য কোনো দেশ বা সংস্থার মুখাপেক্ষী হতে হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তাঁর প্রজ্ঞাময় সিদ্ধান্ত দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বাবার স্বপ্ন পূরণের পথে এখন বাংলাদেশ। আজ বিশ্বে বাংলাদেশের নাম সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। কারণ এ দেশের নেতৃত্বে সেই পিতার সন্তান যার নামের ওপর বাংলাদেশের পতাকা দোলে। দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসার অনুভূতি রক্তের উত্তরাধিকারী হিসেবে পেয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি জেগে আছেন ভেবে আমরা নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি। ভালোবাসার শক্তিতেই দেশ চালাচ্ছেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের ইতিহাস গৌরবের ইতিহাস। যে দেশের মানুষ যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে সে দেশ হয় রত্নাগর্ভা। সে দেশে সমৃদ্ধ শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশ হয়। এ দেশের মানুষের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে দেশমাতৃকাকে স্বাধীন করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিকামী বীর সন্তানরা। দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতাযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। জীবন নিয়ে ফিরে আসার আশাকে উপেক্ষা করে সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমা নিয়ে দীর্ঘ নয় মাস তারা যুদ্ধ করেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধার মুখে শুনেছি পেটে ক্ষুধা নিয়ে, ঘুমহীন দীর্ঘ নয় মাস তাঁরা দেশকে মুক্ত করার লড়াইয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ডাকে মুক্তিকামী জনতা যার যা আছে তাই নিয়ে জনযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অশেষ কৃতজ্ঞতা নাম জানা-না জানা লাখ লাখ মুক্তিযোদ্ধাকে। তাঁদের মহান ত্যাগের কারণে আমরা একটি দেশ পেয়েছি। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর দামে কেনা এই বাংলাদেশ। চড়া মূল্যে কেনা এত কাক্সিক্ষত এ স্বাধীনতা পাওয়ার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে জাতির জনককে নৃশংসভাবে পরিবারসহ হত্যা করা হয়। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ বাঙালি জাতির জনক হত্যাকারী বিশ্বাসঘাতক জাতি হিসেবে পরিচিতি পায়। তারপর ২১ বছর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উচ্চারণ নিষিদ্ধ হয়, নিষিদ্ধ হয় স্বাধীনতার স্লোগান ‘জয় বাংলা’। শুরু হয় বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের হনন, অবমূল্যায়ন, হয়রানি, স্বাধীনতার বিপক্ষশক্তির ক্ষমতায়ন ও ইতিহাস বিকৃতি। সম্পূর্ণ উল্টোপথে পেছনে হাঁটা শুরু করে বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলাদেশে সেই প্রথম শুরু হয় মূল্যবোধের অবক্ষয়। সুনীতির ঝান্ডাধারী ছাত্র সংগঠনকে ব্যবহার করা হয় ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার হাতিয়ারস্বরূপ, শুরু হয় মেধাবী ছাত্রদের দলে ভেড়ানোর নানা অপকৌশল। আজ গভীরভাবে চিন্তা করলে মনে হয় দেশের কোনো প্রয়োজনে এ যুগে যদি স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধের প্রয়োজন হতো কেউ নিজের পাওনা নিশ্চিত না করে যুদ্ধে যেত কিনা!

এ কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা এক দিনে আসেনি। ১৯৫২ সালে মাতৃভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সংগ্রাম শুরু। ’৬৬ সালে ছয় দফা, ’৭০-এর নির্বাচন, ৭ মার্চের ভাষণ, ’৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ- ধাপে ধাপে একটি জাতি সশস্ত্র যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়েছিল। প্রতিটি ধাপে স্বাধীনতাযুদ্ধের নেতৃত্ব প্রদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করেছিল আমার প্রাণপ্রিয় ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগসহ অন্যান্য প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মূলনীতি শিক্ষা, শান্তি, প্রগতির দর্শনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান নিয়ে প্রতিটি আন্দোলন বেগবান ও সফল করার পেছনে ছিল ছাত্র সংগঠনের আপসহীন নেতৃত্ব। ছাত্র সংগঠনের কর্মকান্ডের প্রভাব মূল দলের ওপর পড়ে। স্মৃতিচারণায় বঙ্গবন্ধুকন্যা একদিন বলেন, ‘১৯৬৬ সালে তিনি ইডেন কলেজে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ছাত্রলীগ থেকে। প্রথম দিকে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব মত দেননি। পরে শেখ হাসিনার অনড় মনোভাবের কারণে সম্মতি দেন এবং সহযোগিতা করেন। বঙ্গবন্ধু তখন জেলে; দেশের সব জেলায় ছয় দফার দাবিতে জনমত গড়ে উঠেছে। শেখ হাসিনা বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। খবরটি ওই রাতে বঙ্গবন্ধুকে দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরদিন তিনি যখন জানতে পারেন তখন বলেন, এত দুশ্চিন্তা তিনি নিজের কোনো ইলেকশনেও করেননি। কারণ শেখ হাসিনা হেরে গেলে ছয় দফাও হেরে গেছে বলে প্রতীয়মান হতো। ’

বাংলাদেশ অনেক দেশের কাছে আজ একটি মডেল। সংকটকে সম্ভাবনায় পরিণত করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা এক বক্তব্যে বলেন, ‘১৫ আগস্টের পর দেশে আসতে পারিনি। যারা বেঁচে ছিলেন তাঁদের খুঁজে খুঁজে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দেশে ফিরে আসি। সারা দেশ ঘুরে বেড়িয়েছি। হেঁটে, রিকশায়, ভ্যানে, নৌকায়, ধান খেতের আল বেয়ে আমি সারা দেশ ঘুরেছি। এ দেশটাকে বাবা এত ভালোবেসেছিলেন, তা অনুভব করেছি। দেশটা কীভাবে সাজাবেন স্বপ্ন দেখতেন তিনি। ’

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও পরাজিত শক্তি ছিল যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। বাংলাদেশ স্থিতিশীল হয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার কিছুদিন পর বঙ্গবন্ধুর আমরণ বিশ্বস্ত সহচর চার জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম,  আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও মো. মনসুর আলীকে খুনি মোশতাকের সরাসরি নির্দেশে প্রথমে গুলি করে এবং পরে বেয়নেট চার্জ করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। ১৫ আগস্ট থেকে ৩ নভেম্বর ঘৃণ্য জেলহত্যা পর্যন্ত মোট ১৯টি ক্যু হয়েছিল। যারা বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছিল তারা অভিশপ্ত। আমি জানি না তারা কোনো দিন শান্তির ঘুম ঘুমাতে পেরেছে কিনা বা পারছে কিনা। পরাজিত শক্তির সঙ্গে খুনিদেরও চাওয়া ছিল যে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে।

কথায় আছে, কেউ সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে না যদি রাস্তায় ঘেউ ঘেউ করা প্রতিটি সারমেয়কে ঢিল ছুড়তে যায়। দেশে-বিদেশে অনেক মিথ্যাচার, অপপ্রচার এখনো চলছে। মিথ্যা প্রচারের ঘোলা জলে তারা বাংলার দুঃখী মানুষের ভাগ্যবিধাতাকে হত্যা করেছিল। আজ সময়ের অবকাশে সেই ঘোলা জল থিতু হয়ে পরিষ্কার হয়েছে। সবাই দেখতে পাচ্ছে যারা জল ঘোলা করেছিল থিতু হয়ে নিচে পড়ে আছে ইতিহাসের কালো অধ্যায়ের সেই খলনায়করা। ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে স্মৃতিচারণায় শেখ হাসিনা একদিন বললেন, ‘আমি দেখতে গিয়েছিলাম ১৯৭৪-এর জাল পরা বাসন্তী এখন বেনারসি শাড়ি পরে আছে কিনা! তাকে কেউ খোঁজ নেয়নি। আমিই গিয়েছিলাম দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে তাকে দেখতে। ’

যে শক্তিবলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়ে একটি সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেন তা ছিল বাংলার মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অকৃত্রিম ভালোবাসার শক্তি। লক্ষ্য স্থির করা আপসহীন নেতৃত্বে দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতি ছিল সুপরিকল্পিত। হঠকারী কথা, কাজ তাঁর রাজনীতিতে ছিল না কখনো। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তাঁর ও পরিবারের চরিত্রহননের কম প্রচেষ্টা হয়নি। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি। বাংলা ভাষায় প্রতিষ্ঠিত একটি প্রবাদ আছে- ‘শকুনের দোয়ায় গরু মরে না। ’ বাস্তবতা হলো, শকুন আজ বিলুপ্তির পথে।

শেখ হাসিনা সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করা। এ করোনা মহামারীর মধ্যেও উন্নয়নের স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশ অনেক দেশ থেকে এগিয়ে রয়েছে। যেখানে অনেক উন্নত দেশও মহামারীর অভিঘাতে তাদের অর্থনৈতিক টালমাটাল অবস্থা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এ করোনা মহামারীর ভিতরে আইএমএফের প্রতিবেদনে সারা বিশ্বের যে ২২টি দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হবে তার অন্যতম বাংলাদেশ।

১৯৪৮-১৯৭১ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রকাশিত পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন ১৪টি খ-ে প্রকাশিত হয়েছে। পাকিস্তানি শাসকরা বঙ্গবন্ধুর ওপর নজরদারির ভিতর দিয়ে অলক্ষ্যে হাজার হাজার পৃষ্ঠায় লিখে গিয়েছে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনালেখ্য। এখানেই অবনত মস্তকে স্বীকার করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৌশল! বাংলাদেশ আমার গর্ব। বাংলার মানুষ আমার ভালোবাসা। এই বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে, আমার সন্তানদের বাসযোগ্য হবে- এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি। শেষ করছি আমার প্রিয় সেই কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে- ‘এ ইতিহাস ভুলে যাব আমি, আমি কি তেমন সন্তান যখন আমার জনকের নাম শেখ মুজিবুর রহমান। ’

লেখক: প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ (অতিরিক্ত সচিব)।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।