ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এটিই কি ছাত্রলীগ? কোনো শৃঙ্খলা নেই। মঞ্চে এত নেতা, তাহলে কর্মী কোথায়? এই ছাত্রলীগ আমরা চাই না।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের যৌথ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে বক্তৃতার শুরুতে ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের কর্মীদের বিশৃঙ্খলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তাদের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বার বার স্লোগান বন্ধ করতে এবং পোস্টার নামাতে বলেন।
যাদের নামে স্লোগান দেওয়া এবং পোস্টার দেখানো হচ্ছিল, তাদের বাদ দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, যাদের নামে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে, পোস্টার দেখানো হচ্ছে, তারা বাদ যাবে, নেত্রীকে বলে দেব।
বক্তা তালিকায় তাদের অনেকের নাম থাকলেও সময়ের অভাবে তারা বক্তব্য দিতে পারেননি। এজন্য ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ এটি না। মুজিব কোট পরলেই নেতা হওয়া যায় না। আগে শেখ মুজিবের আদর্শের কর্মী হতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্য দিতে পারলেন না। তাহলে তাদের দাওয়াত দিলেন কেন। মাইক পেলে কেউ ছাড়ে না। আজ শুক্রবার লেখকের (লেখক ভট্টাচার্য) না হয় মনে নেই, জয়েরও (আল নাহিয়ান খান জয়) কি মনে ছিল না?
ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে সন্ত্রাস, দুনীতি, জঙ্গিবাদ ও লুটপাটের বিরুদ্ধে। আমরা মারামারি-পাল্টাপাল্টি করব না। তবে কেউ আক্রমণ করলে আক্রমণ হবে কি না তা সময় বলে দেবে। পরশু দিন মতিঝিলে বিআরটিসির একটি বাস পুড়িয়ে দিয়েছে। আগুন সন্ত্রাস শুরু হয়ে গেছে। আমাদের কর্মীরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাবে, এটি মনে করবেন না।
তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের বলে দিচ্ছি, প্রতিটি ওয়ার্ড, মহল্লা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সতর্ক পাহারায় থাকবেন। সারা দেশে গ্রামে গ্রামে সতর্ক পাহারায় থাকবেন। ছাত্রলীগের সম্মেলন ৮ তারিখ থেকে ৬ তারিখে আনা হলো তারা (বিএনপি) যাতে সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করতে পারে, কিন্তু শুনবে না।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান একটি লেখা লিখেছিলেন, ৭ মার্চের ভাষণেই স্বাধীনতার ঘোষণা পেয়ে গিয়েছিল মানুষ। এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই জায়গা তাদের পছন্দ না। তারা অ্যাডামেন্ট (অনড়), অনুমতি না দিলে অ্যাডামেন্ট (অনড়) থাকবে। আইন মানবে না। বলেছি পরিবহন চলবে, তারপরও কাঁথা, বালিশ, কম্বল, মশার কয়েল সব নিয়ে পল্টন এলাকায় তাঁবু টানিয়ে ফখরুলের লোকজন বসেছে।
বিএনপির উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আর যদি আগুন নিয়ে আসে, সন্ত্রাস করে, জনগণকে নিয়ে জবাব দেওয়া হবে। আমরা মামলা করব। জঙ্গিদের, সাম্প্রদায়িকদের মাঠে নামিয়েছে, এ খবর আমরা রাখি না ভেবেছে?
ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০২২
এসকে/আরএইচ