ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকারের পতন ছাড়া জনগণ ঘরে ফিরবে না: টুকু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
সরকারের পতন ছাড়া জনগণ ঘরে ফিরবে না: টুকু

রাজশাহী: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, বিএনপির গণজোয়ার দেখে সরকার ভীত হয়ে পড়েছে। তাই বিএনপি যেদিন কর্মসূচি দেয় সেদিন এ আওয়ামী লীগও শান্তি সমাবেশ ডাকে।

জনগণের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টির করার জন্য তারা এ ধরনের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিচ্ছে। তবে এগুলো করে আর লাভ হবে না। সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। তাই সরকারের পতন ছাড়া জনগণ আর ঘরে ফিরে যাবে না।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজশাহীর ঐতিহাসিক ভুবন মোহন পার্কে মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।  

তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ. চাল, ডাল ও  আটাসহ নিত্যপ্রয়োজীনয় পণ্য, সার ও ডিজেল, কৃষি উপকরণের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ১০ দফা দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

টুকু বলেন, আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বিএনপি, অঙ্গ সহোযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাদের শান্তি সমাবেশে অশান্তিতে থাকা জনগণ কোনো প্রকার সাড়া দিচ্ছে না। টাকা খরচ করে সমাবেশে এ বিনা ভোটের সরকার লোক আনতে পারছে না। অথচ বিএনপি কোনো প্রকার টাকা খরচ না করেই হাজার হাজার লোক নিয়ে সব কর্মসূচি সফলভাবে পালন করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, জনগণ আর এ সরকারকে চায় না। সরকার তাদের অবস্থা জেনে এখন জোর করে ক্ষমতায় থাকার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা ভুল বকতে শুরু করেছে। এক কথায় তাদের মতিভ্রম শুরু হয়ে গেছে। এজন্যই তারা বিএনপির সব শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে নির্যাতন ও আটক করছে। কয়েক দিন আগে ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পদাযাত্রায় ন্যাক্কারজনকভাবে বাধা দিয়েছে এবং মারধর ও নেতাকর্মীদের আটক করেছে। তবে যতই নিপীড়ন, নির্যাতন, আটক, মামলা, হামলা ও গুলি চলুক বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আর পিছু হঁটবে না। এ সরকারের পতন ঘটিয়েই ঘরে ফিরবে বলে উল্লেখ করেন। এ আন্দোলন আরও বেগমান করতে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি জেলায় জেলা পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে বলেও ঘোষণা দেন টুকু।

সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন জিয়ার উপদেষ্টা রাজশাহীর সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিনু প্রধান বক্তা ছিলেন। তিনি বলেন, দেশে এখন নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জনগণ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে কলকারখানা ও সিএনজি গ্যাসের মূল্য আবারও বৃদ্ধি করে সংকট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিমাসে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। এ অবৈধ সরকার মেগা প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে নিয়েছে। সে অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। বিদেশে বাড়ি-গাড়ি করে নিয়েছে। সুইচ ব্যাংকে অর্থ জমা করেছে তারা। ফলে দেশে অর্থের তারুল্য সংকট দেখা দিয়েছে। বেকারত্বের হার প্রতিনিয়ত বাড়তেই আছে। কিন্ত্র এ অবস্থা আর চলতে দেওয়া হবে না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এ নিশিরাতের সরকারের পতন ঘটানো হবে।

বক্তব্য শেষে বিএনপি নেতারা ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে রাজশাহীর ভুবন মোহন পার্কের সামনে থেকে পদাযাত্রা শুরু করেন। তারা সোনাদীঘি মোড় হয়ে সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, বাটার মোড় হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সদর হাসপাতালের মোড়ে গিয়ে পদযাত্রা শেষ করেন।  

সমাবেশ সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এএইচএম ওবায়দুর রহমান চন্দন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপির সদস্য অ্যডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন তপু, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন, ওয়ালিউল হক রানা, আসলাম সরকার, জয়নাল আবেদিন শিবলী, শফিকুল ইসলাম শাফিক ও বজলুল হক মন্টু।

এছাড়া মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।