ঢাকা, সোমবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

‘তত্ত্বাবধায়কে আমরা কবুল বলেছি, শেখ হাসিনা বলবে কিনা দেখুন’ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৩
‘তত্ত্বাবধায়কে আমরা কবুল বলেছি, শেখ হাসিনা বলবে কিনা দেখুন’ 

ময়মনসিংহ:  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে কবুল বলে দিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) চিন্তা করে দেখুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেন কি-না! তবে উনি বলেছেন- আমি তো কেয়ারটেকার বাতিল করিনি, আদালত বাতিল করেছে।

তার মানে উনি রাজি আছেন।  

শনিবার (১৮ মার্চ) বিকেল পৌনে ৬টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর হরিকিশোর রায় রোডস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয় সংলগ্ন সড়কে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে দুদু বলেন,  ২০২৩ সালই আওয়ামী লীগের শেষ সময়। এরপর আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে না। আমরা এই বছরের শেষে অথবা নতুন বছরের শুরুতে নির্বাচন করতে চাই। কিন্তু সে নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে হবে না। হবে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে।

বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দুদু আরও বলেন, ভাবার কিছু নেই। আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতায় ফিরতে পারবে না। তারা যে কর্ম করেছে জবাব দিতে হবে। সাড়ে ৭০০ নেতাকর্মী তুলে নিয়ে গুম করা হয়েছে। সালাউদ্দিনকে ভারতে নিয়ে ফেলে দিয়ে আসা হয়েছে। জবাব দিতে হবে। ডাক আসলে নেমে পড়তে হবে। এই যুদ্ধে আমাদের জয়লাভ করতেই হবে। নরঘাতক, লুটেরা, দুর্নীতিবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে।  

এ সময় তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে সাবেক ছাত্রনেতা দুদু বলেন, তারেক রহমান দক্ষ কারিগর। তিনি টানা সতের বছর দেশের বাইরে থেকে মৃত প্রায় বিএনপিকে জাগিয়ে তুলেছেন। আসুন সবাই এক্যবদ্ধ হয়ে এই জালিম সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলি।  

সবগ্রাসী দুর্নীতি ও বিএনপি ঘোষিত দশ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে এই সমাবেশ করেছে ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপি।    

এ সময় মহানগর বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ ও অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী।  

এতে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি রুহুল আমিন আকিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক রয়েল, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফখর উদ্দিন বাচ্চু, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী রানা।    

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম বলেন, গত চৌদ্দ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসে দেশে অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে। হামলা, মামলা আর নির্যাতন করে দেশের নির্বাচন সংস্কৃতি নষ্ট করে দিয়েছে। জনগনের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এই অবস্থায় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের বিদায়ের কোন বিকল্প নেই।    

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অপর সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ ওয়ারেস আলী মামুন বলেন, ঘুষ ছাড়া দেশে কোন কাজ হয় না। সর্বত্রই দুর্নীতির মহাউৎসব চলছে। বিদ্যুতে কুইক রেন্টালের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করা হয়েছে। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে। কলকারখানা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। কিন্তু দেশের এই দুরাবস্থার মধ্যেও সরকার আবার সাজানো নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। তাই জাতীর মুক্তির জন্য যে কোন মূল্যে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন নিশ্চিত করা হবে।  

এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় কুরআন থেকে তিলাওয়াত ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু করেন বিএনপি নেতারা। এতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের র্শীষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।