ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

‘একতরফা’ নির্বাচনে জড়িতদের জনগণের আদালতে বিচার হবে: রিজভী 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০২৩
‘একতরফা’ নির্বাচনে জড়িতদের জনগণের আদালতে বিচার হবে: রিজভী 

ঢাকা: ‘একতরফা’ পাতানো নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের জনগণের আদালতে বিচার করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আজকে দেশ-জাতি ও আন্তর্জাতিক মহলের মতামতকে উপেক্ষা করে প্রহসনের নির্বাচন করার জেদ অব্যাহত রেখেছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী।

অথচ জনরোষ এবং আন্তর্জাতিক মহল সবদিক থেকে আজকে এই সরকারের বিষয়ে যে ওয়াকিবহাল এবং মানুষের জনরোষ যে কত তীব্রতর হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে কত বিরূপ এই পাতানো নির্বাচনের জন্য। তারা মনে করছেন, আমরা সব কিছু মিলিয়েই বৈতরণী পার হয়ে যাব। আমরা বলতে চাই, সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং দালালরা কেউ কিন্তু ছাড় পাবেন না। জনগণের আদালত গঠিত হচ্ছে এবং এই আদালতে তাদের প্রত্যেকটি অপকর্মের জবাব দিতে হবে।

রিজভী বলেন, সরকার তার অবৈধ ক্ষমতাকে ধরে রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যত কী হবে, বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে.. এর কোনো খেয়াল তারা রাখতে চান না, রাখছেন না। আজকে পোশাকশিল্প ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। শেখ হাসিনা নির্বিকার। এর মধ্যে যদি পোশাক পণ্য রপ্তানির ওপরে স্যাংশন আসে কত মানুষ যে বেকার হবে, কত নারী যে বেকার হবে, কী পরিমাণ এই ছোট্ট একটি ভূখণ্ডের এত মানুষ ১৮০ মিলিয়ন মানুষ যাদের কর্মসংস্থান যদি না থাকে, পোশাকশিল্পের ওপর যদি আঘাত আসে তাহলে কী পরিণতি হবে, শেখ হাসিনা সেটা ভাবছেন না। কিন্তু তিনি (শেখ হাসিনা) অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে আমাদের পোশাকশিল্পকে একটা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন। উনি দেশ চান না, দেশের অর্থনীতি মজবুত হোক সেটা তিনি চান না। তার দরকার হচ্ছে অমল-ধবল। আর সেই কারণেই খেল-তামাশার নির্বাচন করার জন্য তিনি মরিয়া। আর এটা করতে গিয়ে এদেশকে কী পরিমাণ খেসারত দিতে হচ্ছে এবং হবে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই।

সরকারের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, শীর্ষ নেতাদের বন্দি রেখেছেন কীসের কারণে? একতরফা নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য। ২০১৮ সালে বাংলাদেশে যিনি সবচাইতে আপসহীন জনপ্রিয় নেত্রী, বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করেছেন কীসের জন্য? একতরফা নির্বাচন করার জন্য, পথের কাঁটা দূর করার জন্য, নির্বিঘ্নে আপনার অপশাসন-অপকীর্তি-দুর্নীতি-অনাচার যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য। আর এটার জন্য কথা বললে সেটা হয়ে যায় ষড়যন্ত্র। চক্রান্তকারীরা চক্রান্তের বিরুদ্ধে কথা বললে সেটাকে মনে করে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র। ওবায়দুল কাদের সাহেবরা সেটাই মনে করছেন।

অবরোধ সফল করার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলন চলছে। ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হবে আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে, চলবে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। এই অবরোধ কর্মসূচিতে সর্বস্তরের বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীরা রাস্তায় থাকবেন। সব জনগণ এই অবরোধ কর্মসূচিকে সমর্থন দিয়েছে। আমরা জনগণের সমর্থনে বিশ্বাস করি, আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। আমাদের একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে জনগণ। আমরা বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভর করি না, একে বকা, ওকে বকা এগুলো করি না। আমরা জনগণের শক্তির ওপর নির্ভর করে আমরা আমাদের দাবিগুলোর জন্য এই আন্দোলন-সংগ্রাম করছি। আমি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সবাইকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, জনগণ যার পক্ষে থাকে, জনশক্তি যার সঙ্গে থাকে, তারা কোনোদিন পরাজিত হয় না। হয়ত সাময়িকভাবে আমরা উৎপীড়িত, আমরা নির্যাতিত, আমরা নিপীড়িত। কিন্তু নিপীড়ন-নির্যাতনের সমস্ত আঘাত একদিন প্রতিঘাত হিসেবে এই অত্যাচারী শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াবে, প্রত্যাঘাত করবে এবং গণতন্ত্রের বিজয় হবে।

রিজভী বলেন, সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ২৮৫ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। ১৫টি মামলায় এক হাজার ৩৯৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হামলায় ৬৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

রিজভীর দাবি, ১৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত ২৬৫টি মামলায় তাদের দলের ২৯ হাজার ৭৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর হামলায় এক হাজার ৫২ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া মৃত্যু হয়েছে সাতজনের।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৩
টিএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।