ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘জিয়া বাই চান্স মুক্তিযোদ্ধা’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৬
‘জিয়া বাই চান্স মুক্তিযোদ্ধা’ ছবি: পিয়াস/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ‘মুক্তিযোদ্ধা দুই ধরনের। এর এক ধরন হল বাই চয়েস, যারা স্বেচ্ছায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।

অন্যটি হল বাই চান্স মুক্তিযোদ্ধা, যারা হঠাৎ সুযোগের কারণে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। অবৈধ রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ছিলেন বাই চান্স মুক্তিযোদ্ধা’।

গণজাগরণ মঞ্চের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শনিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বৈষম্যহীন ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ: কোন পথে আমরা?’ শীষর্ক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত।

তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে দু’দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে গণজাগরণ দিবস।

জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে আবুল বারকাত আরো বলেন, মেজর জিয়া অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে কলমের এক খোঁচায় সংবিধানের মৌলিক বিষয়গুলো উঠিয়ে দেন। শাহ আজিজের মতো কুখ্যাত রাজাকারকে করেন প্রধানমন্ত্রী, আলীমকে করেন রেলমন্ত্রী এবং দেশ আবারো পাকিস্তানি ধারায় পরিচালিত হওয়া শুরু করে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের হিসেবে যুদ্ধাপরাধীর সংখ্যা তিন হাজার ২৭৬ জন। প্রকৃত অর্থে এ সংখ্যা পাঁচ হাজারের কম হবে না। দুই ট্রাইব্যুনাল মিলে এক বছরে বিচার সম্পন্ন করতে পারেন মাত্র দশজনের। সেই হিসেব অনুযায়ী সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার পেতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে পাঁচশ’ বছর।
 
আবুল বারকাত আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের মধ্যে আটাশ লাখই ছিলেন গ্রামীণ সমাজের মানুষ। মুক্তিযুদ্ধ শহরের মানুষের যুদ্ধ নয়, মুক্তিযুদ্ধ ছিল গ্রামীণ মানুষের জনযুদ্ধ।

আবুল বারকাত তার বক্তব্যে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের অর্থনীতির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ইসলামী ব্যাংককে চিহ্নিত করে ব্যাংকটিকে রাষ্ট্রীয়করণের দাবি জানান। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি থেকে স্পন্সরশিপ নেওয়ায় বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আয়োজক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দেশের অর্থনীতির দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে উল্লেখ করে গণমানুষের অর্থনীতিবিদ খ্যাত বারকাত বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বিদেশি ঋণের নামে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছে। একদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো দেশের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে, অন্যদিকে দেশের সিংহভাগ সম্পত্তি চলে গেছে মুষ্টিমেয় লুটেরা ও দখলবাজের হাতে।

উন্নয়ন পরিমাপের পদ্ধতির তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই ২০১৬ সালে এসেও যদি কিলোক্যালরি দিয়ে দারিদ্র্য পরিমাপ করা অত্যন্ত লজ্জাজনক। খাদ্য দিয়ে দারিদ্র্য পরিমাপ একটি ‘গরু-ছাগল’ পদ্ধতি। বলা হয়, দেশের মানুষ ধনী হয়েছে, দারিদ্র্যের হার কমেছে। কিন্তু আমাদের দেশের কোনো পরিবারের কারও যদি ক্যান্সার বা কিডনির সমস্যা হয়, তাহলে আজকের ধনী কালই আবার দরিদ্র হয়ে যাবেন।

অধ্যাপক অজয় রায়ের সভাপতিত্বে ও গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক মারুফ রসুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট নেতা জনার্দন দত্ত নান্টু প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে 'রঙ তুলিতে স্বপ্নের বাংলাদেশ' বিষয়ক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু-কিশোরদের মাঝে পুরস্কার ও ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়।

সন্ধ্যায় চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৬
এইচআর/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।