ঢাকা: ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি কাঠামোর মধ্যে থেকে সংগ্রাম করেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু আলাদা রাষ্ট্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, তার কোনো তথ্য প্রমাণ নেই’।
‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) পাকিস্তানি কাঠামোর মধ্যে থেকে সংগ্রাম করেছেন। তাকে আমরা জাতীয় নেতা মানি। কিন্তু বাঙালি বা বাংলা জাতীয়তাবাদের জন্য তিনি কোনো সংগ্রাম করেননি’।
শনিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘গণতন্ত্র বিকাশে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতিই হলো মিথ্যার রাজনীতি, ভুলের রাজনীতি, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে রাজনীতি। ওরা মিথ্যা, বিভ্রান্তমূলক, সার্বভৌমত্বের বিপক্ষে রাজনীতি করে’।
বিএনপির আগামী কাউন্সিল সম্পর্কে তিনি বলেন, বিএনপির ৬ষ্ঠ কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন আশার সঞ্চার হবে। এ কাউন্সিলের মাধ্যমে দলকে শক্ত কাঠামোর ওপর দাঁড় করানো হবে।
একটি ইংরেজি দৈনিকের নাম উল্লেখ না করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘একটি পত্রিকা এক এগারোর সময় ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ করতে চেয়েছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির নেত্রীকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্র করেছিল। আমরা কিন্তু তাদের সমালোচনা করিনি, আমরা ক্ষমা করে দিয়েছি। কিন্তু আজ সকালে দেখলাম, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ওই পত্রিকার সম্পাদক রাষ্ট্রদ্রোহ করেছেন, তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত। আমি জানি না, তিনি (জয়) কীসের জন্য দিয়েছেন? আমরা কিন্তু কোনোদিন এ ধরনের কথা বলিনি। এতেই বোঝা যায়, বর্তমান সরকার গণমাধ্যমের গলাকে কিভাবে চেপে ধরেছে’।
রিজভী বলেন, একটি ইংরেজি পত্রিকা আমরা সবাই পড়ি, মধ্যবিত্তের কাছে জনপ্রিয় পত্রিকা। কয়েক বছর আগে ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকেই হবে, সেখানে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে একটি সম্পাদকীয় ছাপা হয়েছিলো- ‘ট্রিবিউট টু জিয়া’। সাম্প্রতিককালে দেখি, জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার সঙ্গে জড়িত করে ওই পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটা কেন করেন, কী উদ্দেশ্যে করেন, আমরা জানি না।
তিনি বলেন, যারা ওয়ান-ইলেভেনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে আমরা বিষোদগার করিনি, অপপ্রচার করিনি, কুৎসা রটাইনি। যেসব গণমাধ্যম জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধেও কখনোই বিএনপি চেয়ারপারসন অশ্রাব্য-কুশ্রাব্য কোনো কথা বলেননি।
আওয়ামী লীগ না ছাড়লেও বিএনপি এসব ঘটনা ভুলে সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, মানুষের ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে। সেটাকে ক্ষমাও করতে জানি। বড় রাজনৈতিক দল এবং বৃহৎ মানুষ, যারা রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন, দেশ পরিচালনা করেছেন, তাদের হৃদয় বিস্তৃত থাকতে হয়। অনেক কিছু আমরা ভুলে যাই, আমরা সেটাকে মনে রাখি না।
জিয়ার ১৯ দফা বাস্তবায়ন পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. খলিলুর রহমান। বক্তব্য রাখেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম, জিয়া সাংস্কৃতিক জোটের (জিসাস) সাধারণ সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী মনির খান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৬
এসএম/এমআইএইচ/এএসআর