ঢাকা: বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের উপ-কমিটি চূড়ান্ত পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন দলের যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেছেন, কাউন্সিল সফল করতে একাধিক উপ-কমিটি গঠিত হবে।
রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দলের গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য একটি ধারা আছে, যেখানে কাউন্সিলররা বর্তমান গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য প্রস্তাব করতে পারেন। সেজন্য আমরা কাউন্সিলরদের মহাসচিব বরাবর প্রস্তাব পাঠাতে চিঠি দিয়েছি। তাদের দেওয়া প্রস্তাবগুলো উপ-কমিটিতে যাবে। কমিটির সদস্যরা দলের চেয়ারপারসনকে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবেন। এরপরে পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন হবে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিয়ত হুমকিতে জাতি আক্রান্ত মন্তব্য করে রিজভী বলেন, নানাভাবে পীড়িত মানুষের প্রতিবাদ কোনোভাবে সহ্য করতে পারেন না বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। দেশবাসীর কাছে তিনি যেন এখন ‘হুমকি-কন্যা’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তার হুমকির মুখে দেশের মানুষের সকল অধিকার আজ নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে। ভোট, নির্বাচন, কথা বলা, সমালোচনা ও প্রতিবাদ, লেখা, প্রকাশ করা, চলা-ফেরা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ মানুষের সকল স্বাধীনতা শেখ হাসিনার দ্বিতীয় মেয়াদের বাকশালে বন্দী হয়েছে। মানুষের অধিকার শব্দটিকে শেখ হাসিনা স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে পারেন না। মূলত তিনি জনমতকেই রাষ্ট্রীয় শক্তির জোরে হুমকি দিয়ে সাসপেন্ড করে রেখেছেন।
বিএনপির এ যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, দেশবাসীকে প্রতিনিয়ত এ হুমকির অর্থ হচ্ছে একদলীয় দুঃশাসন প্রলম্বিত করার স্বপ্নযাত্রা।
তিনি বলেন, অন্ধ হুমকি ও উৎপীড়নের রাজত্বে সরকারি প্রশাসনিক সংস্থা ও সাংবিধানিক সংস্থাগুলোও প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সুইচের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। সাধারণত নায়েব-মোসাহেবরা উপহাস আর তিরস্কারে লজ্জিত হন না।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন লজ্জা ঢাকার শেষ সুতোটুকুও বিসর্জন দিয়ে সরকারের ইচ্ছা পূরণে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। একটি স্বাধীন সাংবিধানিক নির্বাচন কমিশনের মর্যাদার প্রাচীর ভেঙে দিয়েছে বর্তমান কমিশন। তাই তাদের বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ উত্থাপিত হলেও তারা বেহায়ার মতো আচরণ করছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনারদের যদি ন্যূনতম শরম থাকতো, তাহলে তারা অনেক আগেই পদত্যাগ করতেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রতিটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে শেখ হাসিনার অভিপ্রায়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নির্বাচন কমিশন জাতির অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ভাগ্যলক্ষ্মীকে বিতাড়িত করেছে, যেন এ জাতির ভাগ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনদিন না আসে। এই কমিশনকে এখন গণতন্ত্র ধ্বংসের এক অবিস্মরণীয় ব্যঙ্গ চিত্র হিসেবে জনগণ অবলোকন করছে। আসলে এই মোসাহেব নির্বাচন কমিশনের কাছে নির্বাচন সংক্রান্ত অভিযোগ করা আর অরণ্যে রোদন করা একই কথা। জনগণ যদিও সবকিছু দেখছে-শুনছে, তথাপি কমিশনের চরিত্রটা জনগণের নিকট তুলে ধরি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৬
এমএম/এইচএ