জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির যৌথসভাকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে দলটির ভেতরের পরিবেশ। সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ এতে যোগ দিতে চাইলেও বাধ সেধেছেন তার অনুসারীরা।
সোমবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে এ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এতে রওশন এরশাদ যোগ দিতে চাইলেও তার অনুসারীরা যাবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এমনকি যৌথসভায় কাউকে বহিষ্কার করা হলে অনেকে পার্টি থেকেই সরে দাঁড়ানোর হুমকি দিয়ে বসেছেন বলে জানা গেছে।
রোববার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতার কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে এতে অংশ নেননি পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরাশাদ ও তার মনোনীত মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যৌথ সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতা ছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। দলের আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে এ সভায়।
এদিকে, দলের সংসদীয় বোর্ডের সভায় রওশন এরশাদ যৌথসভায় যোগ দিতে সম্মত হলেও তার সামনেই বিরোধিতা করেন দলের অন্যান্যরা। জানা যায়, রওশনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দীন বাবলু ও মুজিবুল হক চুন্নু তাকে (রওশন এরশাদকে) কঠোরভাবে জানিয়ে দেন, এরকম কোনো সিদ্ধান্ত নিলে পার্টির অবস্থা ভাল হবে না। তাদের বক্তব্যে উপস্থিত কয়েকজন একমতও হন। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে রওশনের সঙ্গে তাদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় বলে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন।
সূত্রমতে, রওশনকে বাদ দিয়ে জি এম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান করায় রওশনপন্থীরা ক্ষুব্ধ। মূলত এ কারণেই তারা ওই যৌথসভায় যেতে চাইছেন না।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে রওশন এরশাদ খানিকটা উত্তেজিত হয়ে নেতাদের বলেন, জাতীয় পার্টি ভেঙে গেলে আপনাদের অস্তিত্ব থাকবে না। দল আছে বলেই আপনারা মন্ত্রী, এমপি হয়েছেন।
এসময় জিয়াউদ্দীন বাবলু বলেন, আমরা আপনাকে শ্রদ্ধা করি, দলকে ভালোবাসি। কিন্তু আপনি ওই সভায় যেতে পারেন না।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ২৫ বছর পর পার্টির মহাসচিব হওয়ার পরও আমাকে বের করে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘসময় আলোচনা ও বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে শীর্ষ নেতাদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে রওশন নিজেই এরশাদের ডাকা যৌথসভায় না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান সেখানে।
বৈঠক শেষে দলের একাধিক সংসদ সদস্য জানান, আগামীকালের (সোমবার) যৌথসভায় আমরা কেউ যাব না। তবে ওই সভায় কোনো কারণে যদি কারোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তাহলে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়বে। কারণ দলীয় অনেক সংসদ সদস্য রয়েছেন, যারা বিভিন্ন জেলার জাতীয় পার্টির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৬
এসএম/আরএইচ