ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ ভাদ্র ১৪৩১, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ সফর ১৪৪৬

রাজনীতি

যারা স্বাধীনতা চায়নি তারাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৬
যারা স্বাধীনতা চায়নি তারাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে

ঢাকা: আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় চায়নি, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিলো তারাই ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

৭৫’র এর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ব্যক্তিগত ভাবে আমি হারিয়েছি বাবা-মা, ভাই আত্মীয় পরিজনকে।

বাঙালি হারিয়েছে মহান নেতাকে, জাতির ভবিষ্যতকে। ঘাতকের নির্মম বুলেট কত তাজা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। যার নেতৃত্বে স্বাধীনতা পেয়েছি তাকে ঘাতকের বুলেট কেড়ে নিয়েছে। শ্রদ্ধা জানাই তার প্রতি।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্ট আমার মা ফজিলাতুননেছাও খুন হন। যার সাহস আমার বাবার পাশে ছিলো, তাকেও রেহাই দেয়নি ঘাতকরা। আমার ভাই, মুক্তিযোদ্ধা, সেনা সদস্য ছিলো। মুক্তিবাহিনী থেকে বের হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয় শেখ জামাল। তাদের দু’জনকে হত্যার সঙ্গে সঙ্গে তাদের নবপরিণীতা বধূকেও হত্যা করে।  

১০ বছরের ছোট ভাই রাসেলের কী অপরাধ ছিলো। জন্মের পর থেকে বাবার স্নেহ বঞ্চিত, ৬৪ সালের তার জন্ম এরপর থেকে বাবা জেলে।

১৯৭১ সালে আমাদের বন্দি করা হয়। তখন বন্দি ছিলা আমাদের ছোট রাসেলও। আমার চাচা আবু নাসেরকেও ঘাতকরা হত্যা করে। আবদুর রব সেরনিয়াবাত কৃষিমন্ত্রী ছিলেন। তাকে হত্যা করে এবং তার ১৩ বছরের ছেলেকেও ছাড় দেয়নি।

আমার আব্বার সামরিক সচিব কর্নেল জামিলও নিহত হন। একই দিন একই সঙ্গে ছাত্রনেতা ফজলুল হক মনিসহ তার স্ত্রীকেও রেহাই দেয়নি।  

সেদিন আমার ফুফুও আক্রান্ত হয়েছিলেন, আমি এখনও কারণ খুঁজে পাই না কেন তাদের হত্যা করা হয়েছিলো।  

যারা এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিজয় চায়নি, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিলো। তারাই চেয়েছিলো বাঙালি জাতির আদর্শ ধ্বংস করে দিতে।  

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ৭৫’র এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মাত্র ১৫দিন আগে ৩০ জুলাই জার্মান যাই। ড. ওয়াজেদ ছাত্র ছিলেন। কিন্তু উনি চাচ্ছিলেন আমি সেখানে যাই। এক পর্যায়ে আব্বা নিজেই বলেছিলেন, আচ্ছা যাও। অনেকটা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে দেশ ছাড়ি। রেহেনাকেও সঙ্গে নিয়ে যাই। মা’ও দিয়ে দিলেন, আমার মা যাওয়ার সময় আকুল হয়ে কেঁদেছিলেন।  

সেখানের যাওয়ার পর ১৩ তারিখ কথা হয়, তখন বলেছিলেন, আয় তোর সঙ্গে অনেক কথা আছে। কিন্তু সে কথা আর শোনা হয়নি। চাপা স্বভাবের ছিলেন, কখনও এভাবে বলেননি তিনি।

পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে ঘুরে দেখতে বলেছিলেন। জার্মানি পৌঁছে আমরা আব্বা-আম্মাকে চিঠি লিখতাম। রেহেনা চিঠি লিখতে খুবই ভালোবাসতো।  

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।  

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকেল ৪টায় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শোক দিবসের এ আলোচনা শুরু হয়।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্ট শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আফজল হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম কামাল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।  

অনুষ্ঠানে ১৫ আগস্ট নিয়ে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ উল আলম লেনিন।  

এ ছাড়া সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ‘৩২ নম্বর মেঘের ওপারে' শীর্ষক একটি কবিতা আবৃত্তি করেন।  

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৬
এমইউএম/এমএ/এসএইচ

**শোক দিবসের আলোচনা সভা চলছে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।