ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ ভাদ্র ১৪৩১, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ সফর ১৪৪৬

রাজনীতি

‘বঙ্গবন্ধুকে একনজর দেখতে সবাই পথ চেয়ে থাকতো’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৬
‘বঙ্গবন্ধুকে একনজর দেখতে সবাই পথ চেয়ে থাকতো’

ঢাকা: বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণ করে আওয়ামী লীগ নেতা ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের চেয়েও বেশি চিনতো শেখ মুজিবুরকে। কিশোর, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই একনজর তাকে দেখার জন্য পথ চেয়ে বসে থাকতো।

যার প্রমাণ আমিই। ১৯৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সারাদেশে নির্বাচনী সভায় সেসব প্রত্যক্ষ করেছি।

১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ৪১তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ‘আলোচনা সভা ও শোক সঙ্গীত’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক ফোরাম।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বের নির্যাতিত মানুষের নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই তাকে আন্তর্জাতিক পরাজিত শক্তি এবং বাংলার মীরজাফররা মিলে হত্যা করেছে। কিন্তু ’৭৫ সালে মীর জাফররা শুধু ব্যক্তি মুজিবকে হত্যা করেনি। তার গোটা পরিবারকে হত্যার মাধ্যমে স্বাধীন দেশটাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো।  

বঙ্গবন্ধুর এ ঘনিষ্ঠ সহচর বলেন, তাদের সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। সেদিন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে ছিলেন বলে বেঁচে আছেন। এখন দেশ পরিচালনা করছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে কাজ করছেন।

বঙ্গবন্ধু মানুষকে অনেক বেশি ভালবাসতেন উল্লেখ করে তোফায়েল বলেন, তিনি রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে বেশি জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। তার সময়ের বিশ্বনেতারা কেউ এতো জেল-জুলুমের শিকার হননি।

তিনি বলেন, ’৭৪ সালে জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু। ২৫ মিনিটের ওই ভাষণে সার‍া দুনিয়ার মানুষের নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন তিনি। এ কারণে অধিবেশনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের প্রধানরা তার প্রশংসা করেন। তারপর অনেক দেশ দ্রুত বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে শুরু করে।

প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করে সেসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাকে আদর ও স্নেহ  করতেন। সে আদর ও স্নেহ আমার চলার পাথেয় হয়ে থাকবে।  

তিনি বলেন, ’৭১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে বের হওয়ার পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি রেককোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে ভাষণ দেন শেখ মুজিবুর রহমান। সে ভাষণে আমি জনগণের পক্ষ নিয়ে তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ নামে আখ্যা দিয়েছিলাম। সেদিন বঙ্গবন্ধুকে ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করেছিলাম। কী যে ভালো লেগেছিলো।

বঙ্গবন্ধু বিচক্ষণ ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ছিলেন উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, তার ব্যক্তিত্বের কারণে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের চেয়ে শেখ মুজিবকেই বেশি চিনতো। কিশোর, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই একনজর তাকে দেখার জন্য পথ চেয়ে বসে থাকতো। যার প্রমাণ আমিই। ১৯৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সারাদেশে নির্বাচনী সভায় সেসব প্রত্যক্ষ করেছি।

তোফায়েল স্মরণ করেন, একবার কুড়িগ্রামের পাঁচটি জায়গায় পায়ে হেঁটে গিয়ে সভা করেছি। সভা শেষে আসার সময় দেখলাম, ৮০ বছরের এক বৃদ্ধা গভীর রাতে হারিকেনের আলো জ্বালিয়ে রাস্তায় অপেক্ষা করছেন। আমি বৃদ্ধের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুজিবকে দেখার জন্য রাস্তায় অপেক্ষা করছি।

তোফায়েল বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাকে এতো ভালবাসতেন যে, ২৯ বছর বয়সে তার সরকারের সচিব বানানো হয়। তারপর বঙ্গবন্ধুকে আরও কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি।  

আয়োজক সংগঠনের  নির্বাহী সভাপতি ও এমপি মমতাজ বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সংগঠনের সহ-সভাপতি মনোরঞ্জন ঘোষাল, সাধারণ সম্পাদক নবীন কিশোর গৌতম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সংগীত পরিবেশন করেন নন্দিত শিল্পী মমতাজ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৬
এমএফআই/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।