ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

মেয়ের হাত ধরে ভোট দিলেন ৯০ ঊর্ধ্ব খায়রুন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
মেয়ের হাত ধরে ভোট দিলেন ৯০ ঊর্ধ্ব খায়রুন ভোটকেন্দ্রের ভেতরে খায়রুন নেছা। ছবি:আবু বকর

বিয়ানীবাজার (সিলেট) থেকে: বয়সের ভারে ন্যূজ খায়রুন নেছার দেহ-মন যেন আর চলে না। খানিকটা চলার পরই জিরিয়ে নিতে হয়। চোখগুলো ছল ছল করছে তার। পা দু’টি বুকের সঙ্গে জড়িয়ে হাঁটুতে রেখেছেন দুই হাত।

৯০ ঊর্ধ্ব এই বৃদ্ধা মেয়ের হাত ধরে সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরসভার নির্বাচনে ভোট দিতে এসেছিলেন। বিয়ানীবাজার বালিকা বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে দৃষ্টি তার ভেতরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা তরুণী-নারীদের দিকে।

উচ্ছ্বল তরুণী আর নারীদের পরখ করে হয়তো নিজের ফেলে আসা যৌবনকালের বিস্মৃতির আয়নায় হারিয়ে গেছেন তিনি।

হয়তো অনুধাবন করছেন, ‘এখানে ভোট দিতে আসা আজকের তরুণী-নারীদের কেউ হয়তো আমার মতো বায়োবৃদ্ধ হবেন একদিন!’

পাশে দাঁড়িয়ে এশমা বেগম মাকে ভেতরে নিয়ে যেতে রিকশা খুঁজছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রের ভেতরেতো আর রিকশা ঢুকবে না। তাই সহায়তা চাইলেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। তবে তার দিকে যেন কারো ভ্রুক্ষেপ নেই। তাই কোনোমতে মাকে ধরে ধরে হাঁটিয়ে নিয়ে গেলেন বিয়ানীবাজার বালিকা বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ফটক পার হয়ে ভেতরে।

এশমা বেগম জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি দক্ষিণ দাস পাড়ায়। মায়ের আগ্রহে রিকশায় করে ভোট দিতে আনেন। কেননা, এবারই পৌরসভার প্রথম নির্বাচন।

ভোট শেষে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে খায়রুন নেছা বলেন, ‘ভালাতো লাগরে, ভোট দিতাম ফারছি (ভোট দিতে পেরে ভালো লাগছে)’।  

কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বিয়ানিবাজার সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মো. মহসীন আলী জানান, এ কেন্দ্র শুধু নারী ভোটারদের। এখানে ১ হাজার ৭৯৭ জন ভোটার ৬টি কক্ষে ভোট প্রদান করছেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হুসাইন মোহাম্মদ হাই জকি বাংলানিউজকে জানান, সকাল থেকে সুশৃঙ্খলভাবে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। প্রায় ১৭ বছরের মাথায় পৌরসভার প্রথম নির্বাচন হচ্ছে। তাই শৃঙ্খলা রক্ষায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক রাখা হয়েছে।

বিয়ানীবাজার পৌরসভার মোট ভোটার ২৫ হাজার ২৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১২ হাজার ৪০৩ জন ও নারী ১২ হাজার ৫৯৪ জন। ১০টি ভোটকেন্দ্রের ৭৫টি কক্ষে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে।

মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬৫ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মেয়র পদে প্রার্থীরা হলেন- নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আব্দুস শুকুর, জগ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান পৌর প্রশাসক তফজ্জুল হোসেন, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী আবু নাসের পিন্টু, মোবাইল ফোন প্রতীকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা আবুল কাশেম পল্লব, মশাল প্রতীকে জাসদের প্রার্থী শমসের আলম, নারকেল গাছ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. বদরুল হক, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী আমান উদ্দিন ও রেল ইঞ্জিন প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা মো. জমির হোসেন।

তবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমান উদ্দিন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. আব্দুস শুকুরকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
এনইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।