ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

মওদুদের নাইকো মামলার স্থগিতাদেশ বাড়লো ১৪ মে পর্যন্ত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২৪ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১৭
মওদুদের নাইকো মামলার স্থগিতাদেশ বাড়লো ১৪ মে পর্যন্ত

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের ক্ষেত্রে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রমের স্থগিতাদেশ আগামী ১৪ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ খারিজ করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা মওদুদের আবেদনের শুনানি ওইদিন পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে রোববার (০৭ মে) এ আবেদনর শুনানি শুরু হয়েছে। শুনানি এক সপ্তাহ মুলতবি করে সে পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বাড়ান সর্বোচ্চ আদালত।

আদালতে আবেদনের পক্ষে মওদুদ আহমদ নিজেই শুনানি করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।     

মওদুদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ এপ্রিল চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদালত ০৭ মে পর্যন্ত স্থগিত করে শুনানির  জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেন।

আগের দিন ১২ এপ্রিল মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে জারি করা রুল খারিজ করে দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

এ মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধান আসামি।

মওদুদ আহমদের আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ০১ ডিসেম্বর বিচারপতি শেখ আব্দুল আউয়াল ও বিচারপতি শহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ তার ক্ষেত্রে বিচারিক কার্যক্রম আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছিলেন।

চার সপ্তাহের ওই রুলে বিচারিক আদালতের গত বছরের ১৬ আগস্ট দেওয়া আদেশ কেন অবৈধ হবে না- তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।
   
খালেদা জিয়াসহ ১১ আসমির বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে।

এ মামলায় আরও কিছু নথি তলব চেয়ে এবং ওয়াশিংটনে নাইকোর বিষয়ে চলা আরবিট্রেশেন শেষ না হওয়া পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন মওদুদ আহমদ। কিন্তু গত বছরের ১৬ আগস্ট বিচারিক আদালত এ আবেদন খারিজ করে দেন। পরে এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ফৌজদারি আবেদন করেন মওদুদ।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ০৯ ডিসেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুদক।

পরের বছরের ৫ মে খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।

মামলা হওয়ার পর খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে গেলে ২০০৮ সালের ০৯ জুলাই দুর্নীতির এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট, সেই সঙ্গে দেওয়া হয় রুল। প্রায় সাত বছর পর গত বছরের শুরুতে রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলাটি সচলের উদ্যোগ নেয় দুদক।

রুলের শুনানি শেষে গত বছর ১৮ জুন খালেদার আবেদন খারিজ করে মামলার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেন হাইকোর্ট। ওই রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুসারে গত বছরের ৩০ নভেম্বর জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান খালেদা।

খালেদা ও মওদুদ ছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তখনকার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া (সিলভার সেলিম) এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

আসামিদের মধ্যে মিয়া ময়নুল হক, কাশেম শরীফ ও কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী পলাতক রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।