এ বিষয়ে মওদুদ আহমদের করা আবেদনের নিষ্পত্তি করে বুধবার (৩১ মে) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
এ মামলায় আরও কিছু নথি তলব চেয়ে এবং ওয়াশিংটনে নাইকোর বিষয়ে চলা আরবিট্রশেন শেষ না হওয়া পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন মওদুদ আহমদ। কিন্তু গত বছরের ১৬ আগস্ট বিচারিক আদালত এ আবেদন খারিজ করে দেন। পরে এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ফৌজদারি আবেদন করেন মওদুদ।
মওদুদ আহমদের আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ০১ ডিসেম্বর বিচারপতি শেখ আব্দুল আউয়াল ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ তার ক্ষেত্রে বিচারিক কার্যক্রম আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছিলেন।
পাশাপাশি চার সপ্তাহের ওই রুলে বিচারিক আদালতের গত বছরের ১৬ আগস্ট দেওয়া আদেশ কেন অবৈধ হবে না-তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।
পরে গত ১২ এপ্রিল এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে জারি করা রুল খারিজ করে দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে মওদুদ আহমদ চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন জানালে ০৭ মে পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন আদালত। একইসঙ্গে ০৭ মে শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
বুধবার পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি শেষে আদালত আবেদনটির নিষ্পত্তি করে তিন মাসের জন্য মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধান আসামি।
খালেদা জিয়াসহ ১১ আসমির বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, সেনা নিয়ন্ত্রিত সাবেক জরুরি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ০৯ ডিসেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুদক।
পরের বছরের ০৫ মে খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরারাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।
মামলা হওয়ার পর খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে গেলে ২০০৮ সালের ০৯ জুলাই দুর্নীতির এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট, সেই সঙ্গে দেওয়া হয় রুল।
প্রায় সাত বছর পর গত বছরের শুরুতে রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলাটি সচলের উদ্যোগ নেয় দুদক।
রুলের শুনানি শেষে গত বছর ১৮ জুন খালেদার আবেদন খারিজ করে মামলার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেন হাইকোর্ট। ওই রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদাজিয়াকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুসারে গত বছরের ৩০ নভেম্বর জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান খালেদা।
খালেদা ও মওদুদ ছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তখনকার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামালউদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন,বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া (সিলভার সেলিম) এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। আসামিদের মধ্যে মিয়া ময়নুল হক, কাশেম শরীফ ও কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী পলাতক, বাকিরা জামিনে রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৭
ইএস/এএসআর