রোববার (১৭ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুধু মার্কিন মানবাধিকার সংস্থার রিপোর্ট নয়, বিবিসি, আল জাজিরা, গার্ডিয়ান, নিউইয়র্ক টাইমসসহ বিশ্বের বড় বড় পত্রিকাগুলো বলেছে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়নি।
বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোকে সরকার চরমভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে দাবি করে ফখরুল বলেন, তারা অনেক কিছু প্রকাশ করতে পারছে না। এতো প্রতিকূলতার পরও তারা অনেকেই অনেক কিছু প্রকাশ করছে। এজন্য তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বলেছি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা অযৌক্তিক। এর মাধ্যমে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের নাভিঃশ্বাস উঠবে। আমরা গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানিয়েছি। আবারও বলছি এসব কিছু উপেক্ষা করে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হলে বিএনপি সাধ্যমতো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এবারকার স্বাধীনতা দিবস অতি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সমগ্র জাতি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলো। ২৬শে মার্চ এই জন্য আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ’
তিনি বলেন, এই দিবসে আমরা স্মরণ করবো মুক্তিযুদ্ধ কেন হয়েছিল। আমরা কেন পাকিস্তানের কাছ থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলাম। একটিমাত্র কারণ ছিল আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। আমাদের যে স্বাধীকার তা নস্যাৎ করে দিয়ে হানাদার দখলদার পাকিস্তান বাহিনী জনগণের আশা-আকাঙ্খা ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছিল। আমরা ভুলতে পারি না ২৫শে মার্চ কাল রাতে হানাদার বাহিনী আক্রমনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার ও স্বাধীকার নস্যাৎ করতে চেয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণ ২৬শে মার্চের ঘটনার মধ্য দিয়ে সেই চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়েছিল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের আজ সেই স্বাধীনতা দিবস যখন উদযাপন করতে চলেছি তখন মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। যার স্বামী ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন, তাকে আজ কারাভোগ করতে হচ্ছে। আজ যখন স্বাধীনতা দিবস পালন করতে যাব তখন হাজার হাজার নিরাপরাধ মানুষকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। লক্ষাধিক গায়েবি মামলা, ২৬ লাখ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এই অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা দিবসটি পালন করছি। দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত ১০/১২ বছর ধরে আমরা দেখছি যারা সরকারের অপছন্দনীয় মানুষ তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, হত্যা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাদের গুম করে ফেলা হচ্ছে। হাজার হাজার নিরাপরাধ মানুষকে মুক্ত করা ও মামলা প্রত্যাহার করার সংগ্রাম চালিয়ে যাব। আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য, গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, আমরা এই দিনটি পালন করতে চাই। আমরা আশা করি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ এই সংগ্রামে বিজয়ী হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, আকরামুল হাসান, রোকেয়া চৌধুরী বেবীসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৯
এমএইচ/আরআর