মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
যুবলীগের বিষয়গুলো কীভাবে দেখছেন- প্রশ্নে কাদের বলেন, রুলিং পার্টি আমাদের মতো দেশে একটি সমস্যা থেকেই যায়, সেটি হচ্ছে কিছু আগাছা-পরগাছা এসব সুবিধাবাদি, স্রোতের সঙ্গে এরাই বেশিরভাগ সময় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
‘ছাত্রলীগের একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে, যুবলীগও বলছে- তারা ট্রাইবুন্যাল গঠন করছে, তাদের নিজেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে শুনানি দেওয়ার জন্য। এখানে বিষয় হচ্ছে- সরকার ও দলের ইমেজটা ক্লিন হওয়া দরকার। প্রধানমন্ত্রী ক্লিন ইমেজের জন্য সারা বিশ্বে প্রশংসিত। ’
কাদের বলেন, আমাদের নেত্রীর নির্দেশনা অনুসরণ করে সব পর্যায়ে দলের ভাবমূর্তি উজ্বল ও স্বচ্ছ করার জন্য যারা অপকর্ম করে, অনিয়ম করে, এমন নেতা-কর্মীদের দলের ভেতরে না থাকাই মনে করি যথার্থ। কারণ আমরা দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো বলে চিন্তা ভাবনা করছি। এ ধরনের অপকর্ম যারা করে তারা সরকারের উন্নয়ন অর্জন ম্লান করে দেয়। দশটা ভালো কাজ একটা খারাপ আচারণ ম্লান করে দেয়।
তিনি বলেন, কিছু কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ এসেছে এবং ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যে-ই অপকর্ম করুক শাস্তি দেওয়া হবে, সাংগঠনিক ব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‘গোয়েন্দা সংস্থাকেও বলা হয়েছে তথ্য দেওয়ার জন্য, কোথায়ও অপকর্ম হলে সেভাবে ব্যবস্থা নিতে। কাউকে যেন ছাড় না দেওয়া হয় দলের যত শক্তিশালীই হোক। ভাল কাজে পুরস্কার ও খারাপ কাজে তিরস্কার থাকবে। ’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ছাত্রলীগের বিষয়টা নজিরবিহীন ঘটনা ঘটলো। এখানে এ কমিটি অনেক যাচাই-বাছাই করে দেওয়া হয়েছিল। আমি ঘোষণা দিয়েছি- ভালো রেজাল্ট ও ভালো রিপোর্ট দেখে, এত অনিয়ম ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়, এটা আসলে হতাশ করেছে। সে কারণে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা তাকে নিতে হয়েছে এবং সবাই সমর্থন দিয়েছি। আশা করি এটা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হবে।
প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কীনা- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, যদি ক্রিমিনাল অফেন্স থাকে তাহলে এ পর্যন্ত আমদের দলে কাউকে কিন্তু ছাড় দেওয়া হয়নি। অনেক মন্ত্রী-এমপিকেও ছাড় দেওয়া হয়নি। সাংগঠনিকভাবে শাস্তি আছে প্রশাসনিকভাবেও শাস্তি আছে।
‘অপরাধ, অপকর্ম করে কেউ পার পাবে না, এক্ষেত্রে সরকার বা দলের পক্ষ থেকে ছাড় নেই। যুবলীগ উদ্যোগ নিয়েছে, আমরা পর্যবেক্ষণ করছি তারা বিষয়টা কীভাবে নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টান্ত স্থাপন করে পথ দেখিয়ে দিয়েছেন প্রত্যেকে শুদ্ধি অভিযান চালাতে পারে। ’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল প্রতিদিনই দুর্নীতি, দুর্নীতি বলে চিৎকার করছেন। এটুকু বলতে চাই এ সরকারের আমলে হাওয়া ভবনের যে লুটপাট-দুর্নীতি তা হয়নি, আমাদের কোনো লুটপাটের হাওয়া ভবন নেই।
‘দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন একটা দল… তখন বিষয়টি হাস্যকর। হাসবো কী কাঁদবো ভেবে পাই না। দুর্নীতির ও লুটপাটের জন্য তাদের নেতাদের কী অবস্থা হয়েছে-তা কি তারা চিন্তা করেন না, আয়নায় নিজের চেহারাটা ভালো করে দেখে দুর্নীতির অভিযোগ আনুক। নিজেরো কী করে সেটা আগে দেখুন। তার (মির্জা ফখরুল) প্রতি এ অনুরোধই করবো,’ বলেন ওবায়দুল কাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেন্বর ১৭, ২০১৯
এমআইএইচ/এমএ