ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ব্যর্থতা ঢাকতে প্রধানমন্ত্রী আজগুবি কথা বলছেন: রিজভী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
ব্যর্থতা ঢাকতে প্রধানমন্ত্রী আজগুবি কথা বলছেন: রিজভী

ঢাকা: রোহিঙ্গা সমস্যা জিয়াউর রহমানের সৃষ্টি বলে সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের বিরোধিতা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে নিজেদের অনতিক্রম্য দুর্বলতা ও ব্যর্থতার গ্লানি ঢাকতেই প্রধানমন্ত্রী আজগুবি কথা বলছেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী একথা বলেন।

বিএনপির এ সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ইতিহাস সাক্ষী, দেশের জনগণ সাক্ষী, মিয়ানমার বারবার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলো।

কিন্তু ’৭৮ সালে সেটি শক্ত হাতে মোকাবিলা করেছেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ’৯২ সালেও রোহিঙ্গা সংকট কঠোর ও সফলভাবে মোকাবেলা করেছেন দেশনেত্রী (তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী) খালেদা জিয়া। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের যারা খবর রাখেন সেসব ব্যক্তিও একথা উল্লেখ করছেন।

তিনি বলেন, আমরা এবারও বলেছি, রোহিঙ্গা সংকট দলীয়ভাবে দেখার কোনো বিষয় নয়, এটি একটি জাতীয় সংকট। এই সংকট বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্ন। ফলে জাতীয় সংলাপ ডাকুন। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সংলাপে বসুন। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান। রোহিঙ্গা ইস্যু দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে গিয়ে এখন সমস্যাটিকে উপক্রান্ত অবস্থায় সমাধান না করে লেজে-গোবরে পাকিয়ে ফেলা হয়েছে। সরকারপ্রধান নিজের ভাবমূর্তি তৈরির হাতিয়ার হিসেবে এটিকে ব্যবহার করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর মানবদুর্যোগের সৃষ্টি করেছেন। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতায় প্রমাণিত হয়েছে- এই সরকার বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে। সেজন্যই প্রধানমন্ত্রী নিজের ব্যর্থতা আড়াল করতে অন্যের সফলতা নিয়ে অবান্তর কথা বলছেন।

রিজভী আরও বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দিয়ে চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের অপকৌশল প্রয়োগ করছে সরকার। বিনা চিকিৎসায় তাকে কারাগারে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যার চক্রান্ত চলছে। গত ৬৪৫ দিন যাবত বিনা অপরাধে কারাবন্দি খালেদা জিয়া যে গুরুতর অসুস্থ এটা দেশের প্রতিটি মানুষ জানে। অথচ সবকিছু জেনেও শুধু রুদ্ধকপাট মুক্তিহীন দেশনেত্রীকে রোগে-শোকে কষ্ট দেওয়ার জন্যই তার চিকিৎসায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। সুচিকৎসার অভাবে ৭৫ বছর বয়স্ক চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার আশঙ্কাজনক অবনতি ঘটছে দিনে দিনে।

পিজি হাসপাতাল (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, কারাবন্দি খালেদা এখানেই চিকিৎসাধীন) কর্তৃপক্ষ তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে সরকারের শেখানো বক্তব্য ও ব্যাখ্যা দিলেও সুচিকিৎসার কোনো পদক্ষেপই নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।

বিএনপির এ নেতা বলেন, গত এক সপ্তাহে কোনো চিকিৎসক খালেদা জিয়াকে দেখতে যাননি। তার হাতে যে ব্যথা ছিল তা পা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা। নার্সরা তার হাতে-পায়ে হাত দিতে পারছেন না, হাত দিলেই তিনি প্রচণ্ড যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে যাচ্ছেন। তার ডান পায়ের গোড়ালিতে একটা ফোঁড়ার কারণে সেই যন্ত্রণা আরও তীব্রতর হয়েছে। অথচ সরকারি চিকিৎসকরা দেশনেত্রীকে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না। জরুরি ভিত্তিতে তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। আমি অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করছি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহিদা রফিক, আব্দুস সালাম, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
এমএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।