ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘বিচার প্রহসনকারীদের আদালত নিয়ে মন্তব্যের অধিকার নেই’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৮ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২০
‘বিচার প্রহসনকারীদের আদালত নিয়ে মন্তব্যের অধিকার নেই’

ঢাকা:  আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা রাতের আঁধারে কোর্ট বসায়, প্রধান বিচারপতির দরজায় পদাঘাত করে, আদালত নিয়ে কথা বলার অধিকার তারা রাখে না। 

বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) দুপুরে শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল উপলক্ষে আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি একথা বলেন।

ড. হাছান বলে, 'আপনারা জানেন গতকাল পিরোজপুরে একজন জজকে বদলি করা হয়েছে।

আইনমন্ত্রী সেই বদলির ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু বিএনপি যেভাবে এটা নিয়ে গলাবাজি করছে, আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো একটু পেছনে ফিরে তাকাতে। বিএনপির আমলে ল’ ডিগ্রি নাই এমন লোককেও তারা হাইকোর্টের জজ বানিয়েছিল। ধরা পড়ার পর পদত্যাগ করেছিল। বিএনপির আমলে একজন হাইকোর্টের জজ রাতের বেলা তার ঘরের মধ্যে কোর্ট বসিয়েছিলেন। দিনের বেলা না রাতের বেলায়। কোর্ট বসিয়ে দুইপাশে বিএনপির দুই নেতাকে নিয়ে বিএনপির পক্ষে রায় দিয়েছিলেন। '

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'বিএনপির আমলে তারা চিফ জাস্টিসের দরজার মধ্যে লাথি মেরেছে। বিএনপি আমলে তাদের এমপি পাপিয়া কোর্টের টাইপরাইটার জজের দিকে ছুড়ে মেরেছিল। যারা রাতের বেলা কোর্ট বসায়, ভুয়া ডিগ্রিধারীদের জজ বানায়, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দরজায় যারা লাথি মারে, তাদের আইন আদালত নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার থাকে না। '

'বাংলাদেশে আইন-আদালত স্বাধীন এবং স্বাধীন হওয়ার কারণেই আমাদের দলের নেতাদের হাইকোর্টে এবং জজকোর্টে হাজিরা দিতে হয়' উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'আইন আদালত স্বাধীন বলেই পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তার স্ত্রী যিনি মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দুই দুইবারের এমপি, দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকে হারিয়ে যিনি এমপি হয়েছেন, তার বিরুদ্ধেও মামলা হয়, তাকে জজকোর্টে হাজিরা দিতে হয়। দুদক যদি স্বাধীন না হতো, তার বিরুদ্ধে মামলাটাও হতো না। তাকে কোর্টে যেতে হতো না। '

মন্ত্রী বলেন, 'আমাদের দলের সাবেক মন্ত্রী আদালতে জামিন চাইতে গেছে, তাকে জামিন বাতিল করে তাকে জেলে যেতে হয়েছে। আমাদের দলের এমপিদের নানা মামলায় হাজিরা দিতে হয়। এমনকি জেলেও যেতে হয়। আইন আদালত স্বাধীন বলেই এটি সম্ভব হয়েছে। যেটি বিএনপির আমলে ছিল না। বিএনপির আমলে আইন এবং আদালত পরাধীন ছিল। তাই আবারও বলবো যারা রাতের বেলা কোর্ট বসায় আর দিনের বেলা সুপ্রীম কোর্টে প্রধান বিচারপতির দরজা লাথি মারে আর যারা ভুয়া ল' ডিগ্রিধারিদের জজ বানায় তাদের এ নিয়ে কথা বলার কোন অধিকার নাই।

সেইসঙ্গে দলের সদস্যদের বিনয়ী হতে আহবান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'আমরা আজকে পরপর তিনবার ১১ বছর ধরে রাষ্ট্র ক্ষমতায়। ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়। আমি আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বলবো, বিনয়ের কোনো বিকল্প হবে না। আমি নেতাকর্মীরে বিনয়ী হওয়ার অনুরোধ জানাবো আমাদের আচরণে মানুষ যেন বিরক্ত না হয়। দল তাদের দায় দায়িত্ব নেবে না। যদি জনসমর্থন পেতে হয় তাহলে শুধু উন্নয়ন দিয়েই নয়, বিনয়ী আচরণ দিয়েও জনসমর্থন পাব। মানুষ যাতে আমাদের ভালোবাসে। ক্ষমতা থাকলে ক্ষমতা প্রদর্শন করতে নাই। '

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মইনুদ্দীন মণ্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম এমপি বলেন, 'বিএনপি ভোট কারচুপির কথা বলে। আওয়ামী লীগ যদি ভোট কারচুপি করতো তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি আসনের মধ্যে দুটিতে বিএনপি কিভাবে জয়লাভ করলো?

তিনি আরও বলেন, বিএনপির দিন শেষ হয়ে গেছে। জনগণ আর বিএনপি- জামায়াতকে ক্ষমতায় আসতে দেবে না। যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেনি, জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার করেনি, তাদের মুখে আইনের শাসনের কথা মানায় না। '

দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'বঙ্গবন্ধু হেঁটে, সাইকেল চালিয়ে রাজনীতি করেছেন। আপনারা গ্রামে গ্রামে যান। ভুল করে থাকলে ভুল স্বীকার করুন। কে সভাপতি হবেন, কে সেক্রেটারি হবেন তার চিন্তা না করে দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। '

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, কেন্দ্রীয় সদস্য বেগম আখতার জাহান ও সাহাবুদ্দীন ফরাজী, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডবলু সরকার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামিল উদ্দীন আহ্ম্মেদ শিমুল এমপি ও ফেরদৌসি ইসলাম জেসি এমপি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওদুদ।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১০ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।