অতীতের মনে করিয়ে দিয়ে ইউনুছ আহমাদ বলেন, ‘এ ভূখণ্ডের মানুষ ও মানুষের জীবন-জীবিকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা আইয়ুব, ইয়াহিয়া, ভুট্টোরা কিন্তু আজ ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে ঘুমায়। তাই জনবিরোধী বাজেটপ্রণেতাদের ইতিহাস ক্ষমা করবে না।
শনিবার (১৩ জুন) দুপুরে পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো একটি দেশ যেখানে কোটি কোটি মানুষের মৌলিক অধিকার ও ন্যূনতম বেঁচে থাকার সুযোগও সংকীর্ণ সেখানে ঋণ করে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এতো বেশি বেতন-ভাতা দেওয়ার কোনো মানে নাই। মোবাইল সিম ও সিম কার্ডের মাধ্যমে দেওয়া সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক পাঁচ শতাংশ বাড়ানোর মাধ্যমে কঠিন আর্থিক সংকটের মুহূর্তে মানুষের খরচ বাড়ানোর এ প্রস্তাব প্রত্যাহার করতে হবে। ’
বাজেটে ঋণ ও সুদ প্রসঙ্গে ইউনুছ আহমাদ বলেন, ‘বাজেটের আকার যেমন বাড়ছে, তেমনি ঋণ ও সুদের বোঝাও দিন দিন বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে সরকারের পক্ষে ঘাটতি বাজেট থেকে বের হয়ে আসা কখনোই সম্ভব হবে না। করোনা ভাইরাসের বাস্তবতা ও দেশের রাজস্ব আদায়ের ইতিহাস বিবেচনায় নতুন অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব। ফলে বাজেটে ঘাটতি ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা থেকে আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে অর্থমন্ত্রী দেশের মানুষের সঙ্গে একটি সস্তা উপহাস করেছেন অথবা তিনি বাংলদেশের মানুষকে বোকা ভেবেছেন। আমরা অবিলম্বে এ অহেতুক সংখ্যা সংশোধন করে বাস্তবভিত্তিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার প্রাক্কলনের আহ্বান জানাচ্ছি। কালো টাকার মালিক অসৎ ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজদের সাদা মানুষে পরিণত করতে বাজেটে অনৈতিক প্রস্তাব আনা হয়েছে। ’
স্বাস্থ্যখাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাজেটে স্বাস্থ্যখাত নিয়ে জাতির সঙ্গে যে মস্করা করা হয়েছে তা অবিশ্বাস্য। এ কঠিন মুহূর্তে স্বাস্থ্যখাত নিয়ে নির্মম তামাশা জাতিকে হতভম্ব করেছে। বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনিতে করোনা ভাইরাসে নতুন করে দরিদ্রসীমার নিচে নেমে যাওয়া মানুষের জন্য তেমন কোনো সুসংবাদ নেই। ’
তিনি বলেন, ‘৫০ লাখ মানুষকে নগদ অর্থ দেওয়ার ঘোষণা রাজনৈতিক চাপাবাজি বলে মনে হচ্ছে। রাষ্ট্রের কাছে মানুষ দান দক্ষিণা চায় না। তারা ঘুরে দাড়ানোর যথার্থ কৌশল ও সহায়তা চায়। সেক্ষেত্রে বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা প্রস্তাব সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি। ’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদেরর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, জিএম রুহুল আমীন, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, ছাত্রনেতা মু. আব্দুল জলিল, শ্রমিক আন্দোলন নেতা শহিদুল ইসলাম কবির প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২০
এমএইচ/এফএম