তারা বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগী খুঁজে বের করা, তাদের চিকিৎসা এবং আইসোলেশন, আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা কন্টাক্ট ট্রেসিং ও তাদের কোয়ারেন্টিন করাসহ করোনা নিয়ন্ত্রণ এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। এটি বলপ্রয়োগের মাধ্যমে অর্জনের বিষয় নয়।
অঞ্চল বা জোনভিত্তিক লকডাউনের উদ্দেশ্য সফল করতে হলে যে জটিল আর বিশাল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে তার উপযোগী কাঠামো বিদ্যমান শাসন ব্যবস্থায় নেই উল্লেখ করে নেতারা বলেন, এ মুহূর্তে করোনা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিদ্যমান স্থানীয় সরকারের সঙ্গে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, আনসার, সেনাবাহিনী, সাংবাদিক, স্থানীয় এনজিও, শিক্ষক, সমাজসেবী, রাজনৈতিক কর্মী-সংগঠক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বসহ সব অংশীজন শ্রম কর্ম ও পেশার প্রতিনিধি সম্পৃক্ত করা আবশ্যক। এরূপ একটি প্রতিষ্ঠানের আওতায় স্থানীয় ছাত্র-যুব সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে এক বিরাট সেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়ে তুলে জনগণের সহায়তায় করোনা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। এ ধরনের ব্যবস্থা ছাড়া কোনোভাবেই স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্তি ও করোনা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা সম্ভব হবে না।
দেশে একটি কার্যকর স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা থাকলে করোনা মোকাবিলায় আজ এ ভয়াবহ অবস্থা হতো না জানিয়ে তারা বলেন, একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে তখন স্থানীয় সরকারের পক্ষে করোনা পরীক্ষা, রোগী শনাক্তকরণ, কন্টাক্ট ট্রেসিং, ত্রাণ ব্যবস্থাপনা ও অন্য সেবা প্রদান করা সম্ভব হতো। করোনা মোকাবিলায় আঞ্চলিক লকডাউনের ধারণা স্থানীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তার কথাই প্রমাণ করছে।
স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশে বিকেন্দ্রীকরণ চরমভাবে উপেক্ষিত হয়েছে মন্তব্য করে নেতারা বলেন, দলীয় রাজনৈতিক কারণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো কখনো সক্ষম হয়ে গড়ে উঠতে পারেনি। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্থানীয় জনগণের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষির মতো মৌলিক সেবা প্রদানের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখা হয়নি। এ জাতীয় সব বিষয় সরকারের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে থাকায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্মহীন ও অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ফলে আজ এ দুঃসময়েও এগুলো সক্রিয় হয়ে জাতীয় প্রয়োজন মেটাতে অক্ষম।
করোনা মোকাবিলার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে প্রশাসনকে বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকার কাঠামোর সব পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজন শ্রম কর্ম ও পেশার প্রতিনিধিত্বশীল স্বশাসিত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২০
এমএইচ/আরবি/