ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

প্রকল্পের বরাদ্দ নিয়ে শিবগঞ্জে আ.লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৫

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২০
প্রকল্পের বরাদ্দ নিয়ে শিবগঞ্জে আ.লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৫

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে আট-১০টি মোটরসাইকেলসহ উপজেলা পরিষদের তিনটি কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।

আর এ ঘটনায় এক পক্ষ অপরপক্ষকে দায়ী করছেন।

আহতদের মধ্যে দু’জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন শিবগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলীরাজ এবং মনাকষা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম আলী।  

জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের হলরুমে আইনশৃঙ্খলা সভা শেষে উন্নয়ন সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শেষ পর্যায়ে বেলা দেড়টার দিকে ৪০ দিনের কর্মসূচি, কাবিখা, মাতৃত্বকালীন প্রকল্প, ইজিপিটিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় তলার ভাইস চেয়ারম্যানের কক্ষসহ তিনটি কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। এতে আহত হন পাঁচজন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কম্পিউটার, জানালা, চেয়ার-টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাকিব আল রাব্বি, স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, দুই ভাইস চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র কারিবুল হক রাজিনসহ উপজেলার সব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।

একটি সূত্র জানায়, সভার শেষ পর্যায়ে ৪০ দিনের  কাবিখা কর্মসূচিতে সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলকে শতকরা ২০ ভাগ লোক এবং উপজেলা  পরিষদের চেয়ারম্যানকে শতকরা ১০ ভাগ লোক নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়া হলে এতে বাধা দেন মনকষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা শাহাদৎ হোসেন খুররম। একপর্যায়ে সংসদ সদস্যের সঙ্গে চেয়ারম্যান খুররমের কথা কাটাকাটি হয়। এ খবর পেয়ে সভা কক্ষের বাইরে উপস্থিত সংসদ সদস্য শিমুলের গ্রুপের সর্মথক এবং খুররম গ্রুপের সর্মথকরা হাতাহাতি ও ভাঙচুরে  লিপ্ত হন।

পরে খুররমের সমর্থকরা উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলামের অনুসারীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে শিমুল গ্রুপের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। দফায় দফায় ঘণ্টা খানেক ধরে চলা এ সংঘর্ষে  শিবগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী রাজ, ,মনাকষা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন।

এদিকে খবর পেয়ে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু কয়েক দফায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপজেলা পরিষদ ভবনকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলি বেগমের জানালা ভাঙচুর করেন। সব

অপরদিকে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইকবাল হোছাইন ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সংসদ সদস্য শিমুল ও পৌর মেয়র কারিবুল হক রাজিন পুলিশের প্রটোকল নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে যান।

এ ব্যাপারে  মনাকষা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মীর্জা শাহাদাত হোসেন খুররম জানান, সভায় উপজেলার  সরকারি বরাদ্দ সঠিকভাবে বাস্তবায়নের অনুরোধ জানিয়েছি মাত্র।

এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল রাব্বি জানান, মূলত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দের ভাগ বাটোয়ারাকে নিয়েই এ ঘটনা ঘটে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো দুঃখজনক। এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি।

এদিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দাবি, সংসদ সদস্য শিমুলের সঙ্গে সভায় চেয়ারম্যান খুররমের কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে সংসদ সদস্যের অনুসারীরা ভবনে ভাঙচুর চালান। এতে তাদের অন্তত পাঁচ নেতাকর্মী আহত হন।

অপরদিকে সংসদ সদস্য শিমুলের দাবি, শান্তিপূর্ণ সভা শেষে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়াকে অশালীন ও আক্রমনাত্মকভাবে মনাকষা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খুররম গালিগালাজ করার একপর্যায়ে ফোন করে সন্ত্রাসীদের ভবনের ভেতরে এনে ভাঙচুর চালিয়েছেন,যা অত্যন্ত দুঃখজনক কাজ।  

সংসদ সদস্য তার সমর্থকদের প্রায় আট-১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের অভিযোগ করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।