ঢাকা: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সার্চ কমিটিতে জোটগতভাবে নয়, এককভাবে পাঠাবে আওয়ামী লীগ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সার্চ কমিটিতে নামের তালিকা পাঠানো হবে।
তিনি বলেন, আজ নাম পাঠানো হবে। যে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যেই আমরা পাঠাবো।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর অ্যাগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর আর্নৌদ হামিলির্সের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার প্রমুখ।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের ভুলভ্রান্তি অতীতে থাকতে পারে। আমাদের দুর্বলতা থাকতে পারে। আগামী নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু ও সুন্দর করার জন্য যে নির্বাচন কমিশনই আসুক তাদের আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।
নাম কী দলের সভানেত্রী নির্ধারণ করবেন নাকি জোটগতভাবে নাম পাঠানো হবে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক বলেন, আমাদের দল থেকে আমরা এককভাবে নাম পাঠাবো। জোটের সদস্যরা তাদের মতো করে নাম দেবে। নাম দেওয়ার বিষয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি। আমরা নাম দিয়েছি (প্রধানমন্ত্রীর কাছে), আমি বলতে পারি, যাদের মনে করেছি দেশে বিভিন্ন দায়িত্বে ছিল, জাতীয় পর্যায়ে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে, নিজ নিজ পেশায় ও চাকরিতে শীর্ষ স্থানে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, তাদের নাম আমরা দিয়েছি। যারা তাদের ব্যক্তিত্ব, নৈতিকতা অতীতে প্রমাণ করেছেন। তারা যাতে স্বাধীনভাবে আত্মশক্তি নিয়ে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করতে পারেন। সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সেটা ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশনকে সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।
সার্চ কমিটির কাছে বিএনপির কোনো নাম প্রস্তাব না করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে অনেক রাজনৈতিক দল রয়েছে। ভুঁইফোড় রাজনৈতিক দলও রয়েছে। তাদের ২০ দল নিয়ে জোট আছে, এটা বাড়িয়ে আরও ৩০টা দল হতে পারে। কিন্তু জনগণের ঐক্য হতে হবে, জনগণের মধ্যে কতটা ভিত্তি আছে ৩০টা দলের, দলের সংখ্যা বড় নয়।
তিনি বলেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী এদেশে নির্বাচন হবে। তারা সার্চ কমিটিতে নাম দিলো কী দিলো না তাতে কিছু যায় আসে না। সার্চ কমিটি তাদের অবস্থান থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটা এমন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে যেটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তারা যতই আন্দোলনের হুমকি দিক না কেন- অতীত অভিজ্ঞতা থেকে যদি তারা শিক্ষা পেয়ে থাকে তাহলে আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করবে।
ড. রাজ্জাক আরও বলেন, বিএনপি যত বৃহত্তর ঐক্য, আন্দোলন-সংগ্রাম করুক না কেন, সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না। ২০১৪ সাল থেকে তারা আন্দোলন-সংগ্রামের নামে গাড়ি ভাঙচুর, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করে চরম নৃশংসতার, বর্বরতার পরিচয় দিয়ে আসছে। সরকারের পতন ঘটাতে তারা সক্ষম হয়নি।
এর আগে ইফাদের কান্ট্রি ডিরেক্টর আর্নৌদ হামিলির্সের সঙ্গে বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী কৃষিখাতে বাংলাদেশের সাফল্য ও বর্তমান চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় জলবায়ু স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণে ইফাদের আরও বেশি সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, ইফাদ আমাদের খুব ভালো উন্নয়ন অংশীদার। কৃষিখাতের উন্নয়নে তারা খুব সহজ শর্তে, কম সুদে ঋণ দেয়। এ মুহূর্তে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে উপকূলে ফসল উৎপাদনে কাজ চলমান আছে। এখানে সহযোগিতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।
বৈঠকে ইফাদের কান্ট্রি ডিরেক্টর আর্নৌদ হামিলির্স বাংলাদেশে সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন, উপকূলে লবণাক্ত এলাকায় ফসল উৎপাদন, কৃষিপণ্যের ভ্যালু অ্যাড ও রপ্তানি বাড়াতে সহযোগিতা করবে বলে জানান। ইফাদ পাঁচ বছরের জন্য যে কান্ট্রি প্ল্যান করতে যাচ্ছে, সেখানে এ বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
জিসিজি/আরআইএস