ঢাকা: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ‘সরকারবিরোধী ঐক্য’ গড়ে তোলা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের যৌথ উদ্যোগে ‘স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
১৯৮৩ সালে স্বৈরাচার প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, আমরা সবাই মিলে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবো। ইনশাল্লাহ বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে পেরেছি, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে পেরেছি, এবার আমাদের ভাই তারেক রহমানের নেতৃত্বেও পারবো ইনশাল্লাহ। আর গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাতার জন্য তারাই আমাদের সাথী হবে যারা গণতন্ত্র চায়, যারা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা চায়। যারা সরকারের সুবিধাভোগী হয়ে কিছু ব্যক্তিগত লাভের জন্য চিন্তা করে না- তেমন মানুষ যারা, তেমন সংগঠন যারা, তেমন দল যারা, যারা বাংলাদেশকে ভালোবাসে, যারা গণতন্ত্র পছন্দ করে, যারা উন্নয়ন চায় সবার জন্য তাদের সবার সঙ্গে আমাদের ঐক্য হবে। তাদের সবাইকে নিয়ে আমরা একসঙ্গে লড়াই করবো।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আমরা সেই বাংলাদেশ চাই যে বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে জনগণের উন্নয়ন, কতিপয় ব্যক্তির নয়, কতিপয় গোষ্ঠীর নয়। আমরা সেই বাংলাদেশ চাই যেখানে মানুষের কথা বলার অধিকার থাকবে, যেখানে মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার থাকবে, মানুষের নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়ার অধিকার থাকবে- সেই বাংলাদেশ আমরা ফেরত চাই। সেই বাংলাদেশ ফিরে পাওয়ার জন্য আবেদন-নিবেদন করলে হবে না, লড়াই করতে হবে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে আমাদের এ দেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা সেটা বাস্তবায়ন করবো।
তিনি বলেন, মহান ভাষা আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবো, এ ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩ সালে জীবন দিয়েছেন আমরা তাদের রক্তের ঋণ শোধ করবো এ লড়াইয়ের মাধ্যমে। আসুন আগামী দিনে সেই লড়াইয়ের জন্য প্রস্ততি নেই।
১৯৮২ সালে তৎকালীন স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ সরকার একটি শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ড. মজিদ খানের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ ও বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করে। প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশ গুলি চালায় এবং জয়নাল, জাফর, কাঞ্চন, দিপালী সাহা, মোজাম্মেল, আইয়ুবসহ অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী নিহত হন। তখন থেকে এ দিনটিকে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করছে বিএনপি।
নব্বইয়ের ডাকসুর ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও তৎকালীন ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির খোকনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সাবেক ছাত্র নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন, এম এ জলিল, আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, জহির উদ্দিন স্বপন, ফজলুল হক মিলন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নাজিম উদ্দিন আলম, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, খন্দকার লুৎফর রহমান, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আসাদুর রহমান খান, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, শহীদুল ইসলাম বাবুল ও ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২
এমএইচ/আরবি