ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ও আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের সঙ্গে বলেন, ভয়াবহ একটা ফ্যাসিজম এই দেশের ওপরে চলছে- এটাকে সরানো জন্য, আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবার জন্যে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমানের নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এখানে একটি গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করবো।
সকাল সাড়ে ৮টায় বিএনপি মহাসচিব দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। এ সময় বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করে কালো পতাকা হাতে নিয়ে হাজারো নেতাকর্মী শহীদ মিনারে আসেন।
এর আগে সকাল ৬টায় রাজধানীর বলাকা সিনেমা হলের কাছে বিএনপির নেতাকর্মীরা সমবেত হয়ে প্রথমে যান আজিমপুর কবরস্থানে। সেখানে তারা ভাষা শহীদদের কবর জিয়ারত করেন এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। এরপর তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ জব্বার, রফিক, সালাম, বরকতসহ অনেকে সেদিন রাজপথে তাদের রক্ত দিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা প্রতিষ্ঠা করবার জন্য আত্মত্যাগ করেছিলেন। তারই ফলশ্রুতিতে পাকিস্তান বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছিল। সম্ভবত বাংলাদেশের এ তরুণরা তারাই একমাত্র নিজেদের মাতৃভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এ আত্ম বিসর্জন দেন। এ নজির আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না।
তিনি বলেন, ৭০ বছর আগে এই ভাষা আন্দোলনের যে মূল চেতনা ছিল আমাদের স্বাধীকারের চেতনা, সেই চেতনা ছিল আমাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার চেতনা, সেই চেতনা ছিল আমাদের একটি মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার, আমরা সবাই কথা বলতে পারবো, আমরা আমাদের স্বাধীন চিন্তাগুলো প্রকাশ করতে পারবো, আমাদের বাক স্বাধীনতা থাকবে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকবে। সবচেয়ে বড় ইচ্ছাটি ছিল আমাদের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৯৭১ সালে সেই চেতনায় আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। পরবর্তিকালে আমরা দেখেছি, শহীদ জিয়াউর রহমান প্রথম একুশে পদক প্রবর্তন করেছিলেন। তারপর থেকে একুশে পদক শুরু হয়েছে। ’
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের এমন একটি সরকার আমাদের এদেশের জনগণের ওপরে চেপে বসে আছে। যারা জনগণের সমস্ত আশা-আকাঙ্খাগুলো দমন করছে এবং একুশের যে চেতনা সেই চেতনাকে তারা ভূলণ্ঠিত করে দিয়েছে। আজকে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, বাক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে এবং এই দেশের অর্থনীতিকে পুরোপুরিভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং বাংলা ভাষা এখনো সর্বস্তরে প্রচলিত হয়নি।
সরকারের দমনপীড়নের কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে আমাদের গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় গৃহবন্দি হয়ে আছেন। আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মিথ্যা মামলায় দেশ থেকে বহু দূরে নির্বাসিত হয়ে আছেন। অগণিত মানুষ আজকে মিথ্যা মামলায় পড়ে আছে। এ থেকে আমাদের পরিত্রাণ পেতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, যুগ্ম-মহাসচিব ডাকসুর সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২
এমএইচ/আরআইএস