ঢাকা: ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা ট্র্যাজেডি ইতিহাসের ঘৃণিত অধ্যায় বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেছেন, সেদিন বাংলাদেশ হারিয়েছিল জাতির সূর্য সন্তানদের। বিডিআর বিদ্রোহের নেপথ্য রহস্য জাতিকে জানানো উচিত সরকারের।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) পল্টনের আনোয়ার জাহিদ মিলনায়তনে পিলখানা ট্র্যাজেডির ১৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পেছনে উদ্দেশ্য ছিল তা হলো আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে নিশ্চিহ্ন করা। ষড়যন্ত্রকারীরা মেধাবী সেনা অফিসারদের হত্যা করে সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। এর পেছনে যে কারণটি ছিল তা হলো আমাদের ঐক্যহীনতা। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে সাড়ে সাত কোটি বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ স্বাধীন করে। কিন্তু স্বাধীনতার বিগত ৫০ বছরে একদিকে বৈদেশিক ষড়যন্ত্র পক্ষান্তরে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিভক্তিসমূহ একটি দিনের জন্য এ জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে দেয়নি।
তিনি বলেন, বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহল এ জাতিকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে দেয়। এসব অপশক্তি না থাকলে আমরা একটি একক ও শক্তিশালী জাতিসত্তা গঠন করতে পারতাম। আমাদের এ অনৈক্যের সুযোগে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশকে ঘিরে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শক্তি এবং আধিপত্যবাদী রাষ্ট্রের যে ষড়যন্ত্র সেই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতার ফসল হচ্ছে পিলখানার নারকীয় ট্র্যাজেডি।
জাসদের উপদেষ্টা এনামুজ্জামান চৌধুরী বলেন, শহীদ সেনা অফিসাররা সবাই ছিলেন জাতির সম্পদ। তাদের অভাব পূরণ করা খুবই কঠিন কাজ। বাংলার মাটিতে হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য নায়কদের ক্ষমা নেই, যত শক্তিধর হোক না কেন তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় হতেই হবে একদিন।
লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী বলেন, বিডিআর ট্র্যাজেডির সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে ব্যর্থ হলে জাতি আমাদের ক্ষমা করবে না। বাংলাদেশকে অকার্যকর করার যে চক্রান্ত তারই অংশ হিসেবেই বিডিআর ট্র্যাজেডির ঘটনা। ষড়যন্ত্রকারী ও তাদের এদেশের দোসররা বাংলাদেশের পতাকা-মানচিত্র ধ্বংস করতে প্রথমেই আঘাত করেছে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে।
সভাপতির বক্তব্যে মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা ২৫ ফেব্রুয়ারি সরকারিভাবে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, একটি দেশপ্রেমিক ও মুক্তিযুদ্ধের সরকারের কাছ থেকে জাতি এ ধরনের সিদ্ধান্তই প্রত্যাশা করছে দীর্ঘ সময় যাবৎ। এ সরকারের কাছে কোনো ধরনের সিদ্ধান্তহীনতা প্রত্যাশা করে না জাতি। ট্র্যাজেডির ১৩ বছর পরও যখন জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয় না তখন জনমনে বিভিন্ন প্রশ্নের সৃষ্টি হয়, ক্ষোভও সঞ্চিত হয়।
সংগঠনের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, জাসদ উপদেষ্টা এনামুজ্জ্জামান চৌধুরী, লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, গণতান্ত্রিক ঐক্যের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের যুগ্ম মহাসচিব মো. মহসীন ভূঁইয়া, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন আল আমিন, কেন্দ্রীয় নেতা বেলাল হোসেন রাজু, মহসীন মুন্সী, শহিদুল ইসলাম, মঞ্জুরুল ইসলাম কাজল প্রমুখ।
আলোচনা সভায় ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর ট্র্যাজেডিতে শাহাদাতবরণকারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২
এমএইচ/আরবি