ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকার আর সিন্ডিকেটের মধ্যে কোনো ভেদ নেই: সাকি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২২
সরকার আর সিন্ডিকেটের মধ্যে কোনো ভেদ নেই: সাকি

ঢাকা: নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সরকার ও সিন্ডিকেটের যোগসাজশকে দায়ী করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, গভীরভাবে দেখলে বোঝা যায় এই সরকার আর সিন্ডিকেটের ভেতর কোনো ভেদ নাই।

বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) প্রেসক্লাবের সামনে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

ভোজ্যতেল, চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, গ্যাস পানি বিদ্যুতের প্রস্তাবিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন দলের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। বক্তব্য রাখেন রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখ্‌তার, মনির উদ্দীন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, কেন্দ্রীয় সদস্য আলিফ দেওয়ান এবং মিজানুর রহমান মোল্লা।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জিরো পয়েন্টের সামনে গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে এবং পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে গণসংহতি আন্দোলনের ১৫/২০ জন আহত হন।



সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা বলেন, মানুষের আয় বেড়েছে, ফলে দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষ নাকি চিন্তিত নয়। এই সরকারের মন্ত্রীরা শুধু মিথ্যাবাদীই নন বরং মানুষের জীবন, কষ্ট ও দুর্দশা নিয়ে তারা তামাশা ও তাচ্ছিল্য করেন—এর প্রতিদান তারা পাবেন। মানুষের এই বাঁচার সংগ্রামই সরকারের ভিত নাড়িয়ে দেবে।

তিনি আরও বলেন, সয়াবিন তেলের দাম এক বছরে কোথা থেকে কোথায় যেয়ে ঠেকেছে। বিক্রেতারাই নির্ধারণ করে দেন আজ তেলের দাম ১০ টাকা বাড়বে না ১৫ টাকা বাড়বে। সরকারের অপেক্ষা করেন না। কারণ তারা জানেন সরকার তাদের পেছনেই আছে। একইভাবে চাল-ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন—সিন্ডিকেটই নাকি বাজারমূল্য নির্ধারণ করে, তার কিছু করার নাই। তাহলে আপনারা আছেন কেন? গভীরভাবে দেখলে বোঝা যায়, এই সরকার আর সিন্ডিকেটের ভেতর কোনো ভেদ নাই। সিন্ডিকেরে মাধ্যমে যে লুণ্ঠন হয়, সরকারের মন্ত্রীরা সরাসরি তার বখরা পান। এভাবেই তারা জনগণের পকেট কাটে।

সাকি বলেন, বছর বছর বিদ্যুতের দাম বাড়ে কেন? ৫ বছরের কথা বলে ১৩ বছর ধরে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট পালা হচ্ছে। বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে জনগণের পকেটের পয়সা ভর্তুকি হিসেবে দেওয়া হচ্ছে, সরকারের পছন্দের লোকদের। এটাই হলো সরকারি মদদে বিদ্যুৎ খাতের সিন্ডিকেট।

তিনি আরও বলেন, করোনায় আরো ৩ কোটি মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। আমরা হিসাব করে দেখেছি, আড়াই কোটি পরিবারকে ৪ জন করে ধরলে ১০ কোটি মানুষকে সরাসরি নগদ অর্থ সহায়তা দিতে হবে, রেশনের আওতায় আনতে হবে, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এই গণবিরোধী সরকার সে পথে না হেঁটে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে মানুষকে আরও বিপদের মধ্যে ফেলছে। এই সরকারকে উচ্ছেদ না করে মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

দুর্নীতি লুটপাট ও ভোট চোর সরকারের কোনো নৈতিক সাহস নেই উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, তারা বাংলাদেশে বেশিদিন টিকতে পারবে না। পুলিশ ও গুন্ডা দিয়ে গদিতে টিকে থাকা যাবে না। গণঅভ্যুত্থানের ভেতর দিয়েই এই সরকারের পতন হবে। এমন লড়াই গড়ে তুলতে হবে যাতে কোনো সরকারই আর ক্ষমতায় যেয়ে ক্ষমতাকে জমিদারি বানাতে না পারে।

তিনি বলেন, এবারের লড়াই সরকার পতনের এবং ভোটাধিার প্রতিষ্ঠার লড়াই। বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখে আর কোনোভাবেই মানুষের অধিকার অর্জিত হতে পারবে না।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২২
এমজেএফ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।