ঢাকা: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ ১৭৩দিন হরতাল করেছিল উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার জন্য আওয়ামী লীগই আন্দোলন করেছিল। তারা ১৭৩দিন হরতাল করেছিল।
সোমবার (৭মার্চ)দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৬তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম ও বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে বিধান তারা বাতিল করলো এটা কিন্তু তাদেরই দাবি ছিল যা সবাই জানি। তারা ১৭৩দিন হরতাল করেছিল। অসংখ্য মানুষ হত্যা করেছিল। গান পাউডার দিয়ে বাস পুড়িয়েছিল। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে। আবার তারা ক্ষমতায় আসার পর ২০১২ সালে যখন দেখলো তাদের পক্ষে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব নয়। তখন তারা বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে বদলে দিয়ে আবার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা বহাল করলো। বিচারপতি খায়রুল হককেও এ দেশের জনগণের সামনে জবাবদিহি করতে হবে এই ঘটনা ঘটানোর জন্য। এর কোনো ব্যতিক্রম হবে না।
তিনি বলেন, বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের ফলে দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। মানুষ ভোট দিতে যায় না আস্থা হারিয়ে গেছে। যে সংবিধানের কথা তারা বার বার বলে এখন আবার বলছে সংবিধানের মতো নির্বাচন হবে। আরে সংবিধানতো তোমরা তৈরি করেছো। সংবিধান কেটেকুটে যখন যেটা প্রয়োজন তোমরা তৈরি করেছো। আজকে না, এটা তোমাদের পুরোনো ইতিহাস। ১৯৭২সাল থেকে ৭৫সাল পর্যন্ত অপকর্মকে ঢাকা দেওয়ার জন্য, যত মানুষকে হত্যা করেছিলে তাকে ঢাকা দেওয়ার জন্য তোমরা সংসদে এক দলীয় সরকার বাকশাল করেছিলে সংবিধানকে বদলে। সেই সংবিধানকে এখন আবার কেটে ছেটে তোমরা তৈরি করেছো, ওটার মধ্যে আর কোনো কিছু নেই।
আওয়ামী লীগ চিরদিন ক্ষমতায় থাকতে চায় বলেই গণতন্ত্র ভোটাধিকার সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তাদের উদ্দেশ্য একটাই যেভাবে হোক ক্ষমতায় টিকে থাকা। তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার জন্য তাদের মতো করে একটা নির্বাচন করতে চায়। সে কারণেই তারা ইসি গঠন করে। আবার তার আগে সার্চ কমিটি করে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ২০০৮সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোর্টের মাধ্যমে কাজগুলো করে। আদালতের মাধ্যমে তারা রায় দেয়, সেটাকে তারা বাস্তবায়িত করে। আবার বলে ইসি করেছে আইনের মাধ্যমে। কারা এই আইন পাস করলো। একটা অবৈধ সংসদ।
বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক সাবেক ছাত্র নেতা আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, দলের ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিন সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম দুই মাসে দেড়শো জনের বেশি রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীকে আটক করা হয় দুর্নীতির অভিযোগে। সেই বছর ৭মার্চ ঢাকা সেনানিবাসের মইনুল রোডের বাড়ি থেকে তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিনকে স্মরণ করার জন্যই এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০২২
এমএইচ/এসআইএস