ঢাকা, শুক্রবার, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৪ মে ২০২৪, ১৫ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

মুক্তিযুদ্ধকে আমরা এক ব্যক্তির ইতিহাসে পরিণত করেছি: জাফরুল্লাহ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২২
মুক্তিযুদ্ধকে আমরা এক ব্যক্তির ইতিহাসে পরিণত করেছি: জাফরুল্লাহ জাফরুল্লাহ

ঢাকা: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধকে আমরা এক ব্যক্তির ইতিহাসে পরিণত করেছি। কিন্তু কোনো জাতি এক ব্যক্তি দ্বারা সৃষ্টি হয়নি।

দেশ স্বাধীনের পেছনে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যারা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন সকলের অবদান রয়েছে। তাজউদ্দীন আহমেদ, মাওলানা ভাসানী, মুজাফফর আহমেদসহ সবারই অবদান রয়েছে।

শনিবার (১২ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জাফরুল্লাহ বলেন, যখন আমি আগরতলায় ফিরে আসতাম তখন তাজউদ্দীন ভাই সব সময় বলতেন, জাফরুল্লাহ আমি জানি আলজেরিয়ার ইতিহাস, এ দেশ যখন স্বাধীন হবে তখন হয়তো আমি থাকবো না। এটাই হলো জাতির দুর্ভাগ্য। যারা জাতিকে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা সব সময় স্মরণযোগ্য হয় না। সেই একই অবস্থা হয়েছে আমিনুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মওদুদের এবং আমাদের প্রবাসী সরকার প্রধান তাজউদ্দীন আহমেদের ক্ষেত্রে। আমাদের তাদের মনে রাখা উচিত।

তিনি বলেন, মানুষের মস্তিষ্ক সবসময় সব কিছু মনে রাখতে পারে না, অনেক কিছুই ভুলে যায়। তাই এদেশের ইতিহাসকে বারে বারে বলতে হবে। ১৯৭৪ সালে দুঃশাসনের কারণে বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। অমর্ত্য সেন তার বইয়ে লিখেছেন, সেই বছর সবচেয়ে বেশি খাদ্য উৎপাদন হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভিক্ষ হওয়ায় সেখানে তিন লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। সেই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি আবারও শোনা যাচ্ছে। অনাহারে মারা যাচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু অর্ধ আহার ও অপুষ্টিতে আছে।

ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদকে স্মরণ করে জাফরুল্লাহ বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ইংল্যান্ডে। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে যারা ইংল্যান্ডে যেতেন, তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা নিয়ে সেখানে তিনি আন্দোলন করছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যারিস্টার মওদুদ এবং আমিনুল ইসলাম প্রবাসী সরকারকে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রায়ই দেখি বড় বড় দলের নেতারা তাদের নেতাদের নেতৃত্বেও ওপর সন্তুষ্ট না। তারা যখন এমনি বলে, তখন তারা বলে ১৩ বছর ধরে একটু সরকার ক্ষমতায় আছে। তারা (অন্যান্য দল) কী করেছে কিন্তু সেই নেতা যখন মঞ্চে ওঠেন, তখন তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কোনো কথা বলেন না। একটা দেশ এরকম করে গড়ে উঠতে পারে না।

তিনি বলেন, একবার ভাবেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন সেটা যদি সেই দেশের সেনাবাহিনী প্রধান বুদ্ধিজীবীরা সমর্থন দিতেন তাহলে আমেরিকান ডেমোক্রেসির কি অবস্থা হতো কিন্তু সে দেশের সেনা প্রধান সেটা করেননি। আর আমার দেশের সেনা প্রধান, আমি শুধু বর্তমান সেনা প্রধানের উদ্দেশ্যেই বলছি না। সেরকমটা পারবেন না। পুলিশ প্রধান বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতা বলেন আর বুদ্ধিজীবী বলে প্রত্যেকেই নিজের বিশ্বাস গিলে ফেলে তারপর কথা বলছি, যেন আমার নেতা সন্তুষ্ট হন।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিচারপতি মো. আবদুল মতিন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।  


বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২২ 
এমএমআই/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।