ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

কর্নেল অলির ৮৪তম জন্মদিন রোববার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩২ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২২
কর্নেল অলির ৮৪তম জন্মদিন রোববার

ঢাকা: লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রমের ৮৪তম জন্মদিন রোববার (১৩ মার্চ)।

অলি আহমেদের জন্ম ১৯৩৯ সালের ১৩ মার্চ।

তার পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশে। তার বাবার নাম আমানত ছাফা এবং মায়ের নাম বদরুননেছা।

মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বপ্রথম বীর বিক্রম খেতাবধারী বীর মুক্তিযোদ্ধা অলি আহমদ ১৯৭১ সালে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে অংশ নেন। চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার তিনি অন্যতম সাক্ষী।

১৯৭১ সালে অলি আহমদ কর্মরত ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। এর অবস্থান ছিল চট্টগ্রামের ষোলশহরে। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে ভারতে পুনরায় সংগঠিত হওয়ার পর নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর জেড ফোর্সের অধীনে যুদ্ধ করেন।

স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্নেল পদে উন্নীত হয়ে অবসর নেন। পরে রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল অলি আহমদের নেতৃত্বে এক দল মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান নেন চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাইয়ে। বীর মুক্তিযোদ্ধারা সেখানে দুই ভাগে ছিলেন এবং সামনে ও পেছনে ছিল তাদের প্রতিরক্ষা। সম্ভাব্য যুদ্ধের সব ব্যবস্থা দ্রুত সম্পন্ন করে অলি আহমদ পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কে যান।

তখন তিনি দেখতে পান, ফাঁকা রাস্তায় সীতাকুণ্ড থেকে তীব্র বেগে একটি জিপ আসছে। জিপে ছিলেন সিরাজুল ইসলাম এবং অন্য একজন। তারা দুইজন অলিকে জানান, পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের দেখে ফেলেছে। দুই মিনিট পর অলি ফাঁকা রাস্তায় দেখতে পান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি জিপ ও ট্রাকবহর আসছে এবং ২শ গজ দূরে থেমে গুলি শুরু করে। অলির ৫০ গজ দূরে মেশিনগান নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন দুই-তিনজন সহযোদ্ধা। তার নির্দেশে তারা পাকিস্তানী বহরের একদম পেছনের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পাঁচ গজের মধ্যে এলএমজি নিয়ে পজিশনে ছিলেন তার আরেক যোদ্ধা। তিনি তাকে বলেন জিপ লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে। গজ বিশেক দূরে ছিল মর্টার দল। তারা ট্রাককে লক্ষ্য করে মর্টারের গোলাবর্ষণ করে। তিনি নিজে রিকোয়েললেস রাইফেল দিয়ে পাকিস্তানীদের মোকাবিলা করেন।

খবর পেয়ে আরও পাকিস্তান সেনা সেখানে আসে এবং যুদ্ধে যোগ দেয়। রাত ১০টা পর্যন্ত যুদ্ধ চলে। অলি আহমদ দক্ষতা ও সাহসিকতার সঙ্গে কম পরিমাণ অস্ত্র এবং সহযোদ্ধা নিয়ে পাকিস্তানদের মোকাবিলা করেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ সাহসিকতার জন্য তিনি বীর বিক্রম উপাধিতে ভূষিত হন।

জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করলে তিনি সেনাবাহিনীর তার চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে যোগ দান করেন। তখন তার আরও ৯ বছর চাকরি ছিল। এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি যোগাযোগ মন্ত্রী হন। যমুনা সেতুর কাজ তার সময়েই শুরু হয়। দীর্ঘকাল বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত থাকার পর ২০০৬ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি গঠন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২২
এমএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।