ঢাকা: করোনা পরিস্থিতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনের নানা টানাপোড়েন ও নিষেধাজ্ঞার ফলে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের বাজারেও বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অল্প সময়ের মধ্যেই সরকার দ্রব্যমূল্য পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
বিবৃতিতে বিএনপি নেতাদের মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা প্রায় এক দশক যাবত তথাকথিত গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত করার নামে সরকার পতনের কথা বলে আসছেন এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মতো আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ভয়ঙ্কর পরিণতির হুমকি দিচ্ছেন! বিএনপি নেতাদের এই ফাঁকা আওয়াজ মিথ্যাবাদী রাখাল ও বাঘের শিশুতোষ গল্পের কাহিনী ছাড়া আর কিছু নয়। বাংলার জনগণ তাদের দুরভিসন্ধিমূলক ফাঁকা আওয়াজে বিভ্রান্ত হয় না এবং কোনদিন হবেও না। সরকার পতনের চক্রান্ত বাস্তবায়নে তারা দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশবিরোধী ও জনগণের স্বার্থ পরিপন্থি নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকায় এদেশের জনগণ তাদের চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। স্বৈরশাসন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও যুদ্ধাপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতা, হাওয়া ভবন-খোয়াব ভবন খুলে প্রশাসনের সর্বস্তরে ও আর্থ-সামাজিক সব খাতে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার কারণে বিএনপির বিরুদ্ধে জনগণ ব্যালট রায়ের মাধ্যমে বার বার নিরব অভ্যুত্থান সংঘটিত করেছে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি নেতারা দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতির কথা বলছেন। আমরা আগেই বলেছি, দীর্ঘ ২ বছরের বেশি সময় বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ বিস্তারের কারণে বিশ্বের অপারাপর দেশের সাথে আমদানি-রপ্তানির স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হওয়া, বেশ কিছু আমদানি নির্ভর দ্রব্যের সংশ্লিষ্ট দেশে উৎপাদন কম হওয়া এবং করোনার অভিঘাত কাটতে না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের নানা টানাপোড়েন ও নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্ববাজারে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে। অন্যান্য দেশের মতো যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের বাজারেও। সেই সাথে রয়েছে অসাধু মহলের ষড়যন্ত্র, মুনাফালোভী মজুদদারগোষ্ঠীর অপতৎপরতা। দেশবাসী ভুলে যায়নি, অতীতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ভয়াবহ পরিস্থিতির স্মৃতি। উত্তরবঙ্গে মঙ্গা দেশবাসীর স্মৃতির মানসপট থেকে মুছে যায়নি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানন্ত্রীর নির্দেশে ইতোমধ্যে আমদানি পর্যায়ে তেল, চিনিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় ভোজ্যতেলের বর্তমান মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে এবং কেউ অতিরিক্ত দাম রাখলে ১৬১২১ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অসাধু মুনাফাখোর মজুদদারদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে, হাজার হাজার টন ভোজ্যতেল উদ্ধার হচ্ছে। আমরা আশা করি, বাজারের এই সঙ্কট থাকবে না এবং অল্প সময়ের মধ্যেই দ্রব্যমূল্য পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২২
এসকে/এমজেএফ