ঢাকা: দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা যখন দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে তখন মানুষের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। সত্যিকার অর্থে বিএনপি নাটক করতেই দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) গেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (১১ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পিআইবি-সোহেল সামাদ সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০২০ প্রদান অনুষ্ঠান শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সরকারের উচ্চপদস্থদের বিরুদ্ধে দুদকে বিএনপির অভিযোগ দাখিল করা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি টেলিভিশনে দেখলাম, দুর্নীতিতে যারা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, তাদের পক্ষ থেকে আলাল-দুলালরা দুদকে গেছেন। আমি মনে করি দুদক বরং তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে হাওয়া ভবনের মাধ্যমে যে লুটপাট হয়েছে এবং তাদের কারণে কীভাবে দেশ দুর্নীতিতে পর পর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সে তথ্যটা পাবে।
বিএনপি মহাসচিব পাকিস্তানের নির্বাচন পদ্ধতিকে গণতন্ত্রের আদর্শ বলেছেন—এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা এতদিন ধরে বলে আসছিলাম বিএনপি এবং তার মিত্রদের কাছে পাকিস্তানই হচ্ছে আদর্শ। তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান চেয়েছিলেন দেশটাকে পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন করতে, কিন্তু পারেন নাই। তারা যে এখনো পাকিস্তানকে অনুসরণ করেন, দেশটাকে পাকিস্তানি ভাবাদর্শে নিয়ে যেতে চান, সেটি মির্জা ফখরুল সাহেব গতকাল খোলসা করেছেন।
মুন্সিগঞ্জের বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় মন্ডলের জামিনে সন্তোষ প্রকাশ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, হৃদয় মন্ডলের পুরো ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক, অনভিপ্রেত। তিনি জামিনে মুক্তির পরও বলেছেন, তার বিরুদ্ধে সেখানকার শিক্ষকদের একটি আভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমি মনে করি এর পেছনে আরো কারো হাত থাকতে পারে।
এর আগে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সৈয়দ বদরুল আহসানের হাতে পিআইবি-সোহেল সামাদ পুরস্কার ২০২০ এর সম্মাননা স্মারক, অভিজ্ঞানপত্র ও চেক তুলে দেন। তথ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে সৈয়দ বদরুল আহসানকে সুলেখক, সজ্জন এবং নিখাদ ভদ্রলোক হিসেবে আখ্যায়িত করে অভিনন্দন জানান এবং ১৯৯৯ সাল থেকে সাংবাদিকতায় এই পুরস্কার প্রবর্তনের জন্য প্রয়াত সাংবাদিক সোহেল সামাদের পরিবারকে এবং সহযোগিতার জন্য পিআইবিকে ধন্যবাদ দেন।
তিনি বলেন, গুণী সাংবাদিক তৈরি করার ক্ষেত্রে এ ধরনের পুরস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সৈয়দ বদরুল আহসান তার চার দশকের সাংবাদিকতায় এশিয়ান এজ, নিউ নেশন, মর্নিং সান, বাংলাদেশ অবজারভার, ইনডিপেনডেন্ট, নিউজ টুডে এবং ডেইলি স্টার পত্রিকায় কাজের পাশাপাশি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, সাউথ এশিয়া মনিটরসহ বিভিন্ন দেশের সংবাদপত্রে নিয়মিত কলাম লিখেছেন।
১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল অবধি লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রেস মিনিস্টারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ফ্রম রিবেল টু ফাউন্ডিং ফাদার: শেখ মুজিবুর রহমান, গ্লোরি অ্যান্ড ডিসপেয়ার: দ্য পলিটিকস অব তাজউদ্দীন আহমেদ, দ্য হিস্ট্রি মেকারস ইন আওয়ার টাইমস তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।
১৯৫৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন সৈয়দ বদরুল আহসান।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, পিআইবি-সোহেল সামাদ পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ বদরুল আহসান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সৈয়দ বদরুলের সহধর্মিণী সৈয়দা জাকিয়া ও পিআইবি কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
জিসিজি/এমজেএফ