ঢাকা: সরকার বিরোধীদল দমনের সব ব্যবস্থা করেছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এভাবে বিরোধীদল দমন করে বিশ্বের কোনো স্বৈরশাসক গদি রক্ষা করতে পারেনি। আপনারাও পারবেন না।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের মানুষ ভয়ংকর দুঃসময়ের মধ্যে বসবাস করছে। তাদের কথা বলা ও লেখার স্বাধীনতা নেই। অথচ সংবিধান আমাদের কথা বলা ও লেখার স্বাধীনতা দিয়েছে। কিন্তু তা শেখ হাসিনার অদৃশ্য ইশারায় বন্ধ। দেশের গণতন্ত্রের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড নেই। কিন্তু তারা গণতন্ত্রকে ভয় পায়। গণতন্ত্রের মানে তো বিরোধীদল আপনাদের সমালোচনা করে আপনাদের ভুল ধরিয়ে দেবে। কিন্তু আপনারা সেটা সহ্য করতে পারেন না।
‘দেশে শক্তিশালী বিরোধীদল নেই’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলছেন দেশে শক্তিশালী বিরোধীদল নেই। আসলে বনের নেকড়ে সব প্রাণী খেয়ে ফেলার পর বলছে যে আর প্রাণী নেই। আরে বিরোধীদল শক্তিশালী বলেই তো তাদেরকে আপনি কারাগারের ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় আছেন। তাদেরকে গোরস্থানে পাঠিয়েছেন। আসলে বিএনপি ও বিরোধীদল আপনি ভয় পান বলেই তো দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তরুণ নেতা ইশরাককে বন্দি করেছেন। শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, রফিকুল আলম মজনু ও সুমন ভুঁইয়াকে বন্দি করেছেন।
তিনি বলেন, সরকার পাতানো সংসদ করেছে। যেখানে বিরোধীদল নেই। সেখানে মমতাজের গান হয় কিন্তু বিরোধীদলের বিতর্ক নেই। আর বলেন দেশে বিরোধীদল নেই। অন্যদিকে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করছেন, কারাগারে বন্দি করেছেন। বিরোধীদল দমনের সব ব্যবস্থা আপনি করেছেন। এভাবে পৃথিবীর কেউ কেউ গদি রক্ষা করতে পারেনি। আসলে আপনি আতঙ্কের মধ্যে আছেন আর রাতের অন্ধকারে ফাঁকা বুলি দিচ্ছেন। আপনার সাহস থাকলে খালেদা জিয়াসহ সব নেতাকর্মীদের মুক্তি দেন। দেখবেন প্রবল স্রোত কীভাবে আপনার সিংহাসনের দিকে ধেয়ে যায়।
‘দুদকে সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির অভিযোগ নাটক’ তথ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের উত্তরে রিজভী বলেন, বিএনপি নাটক করছে। আরে আপনি বলেননি কিসের নাটক? এই নাটক তো, বিখ্যাত লেখক জর্জ বার্নার্ড শ’র নাটক। শেক্সপিয়ারের নাটক। সেখানে বিএনপির মতের প্রতিফলন ঘটেছে। আপনারা তো ক্ষমতায় আসার পর ১১ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছেন। আর আমাদের কাজকে বলছেন নাটক। ওটা তো বাস্তব জীবনের নাটক। আপনারা পদ্মাসেতু, ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রকল্প থেকে লুট করে টাকা পাচার করেছেন। আপনারা মহা দুর্নীতি করেছেন। এজন্যে আপনাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে।
আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, ক্ষমতাসীন অবৈধ আওয়ামীলীগ সরকার মানুষের মনের ভাষা বুঝতে পারছে না। কারণ তারা রোগাক্রান্ত। আমাদেরকে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। অবিলম্বে সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। সেসঙ্গে বিএনপিসহ বিরোধীদলের সব নেতাকর্মীর মুক্তি দিতে হবে। আসুন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বিএনপি নেতা শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, রফিকুল আলম মজনু, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, শ্রমিক নেতা সুমন ভুইয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি দাবিতে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে গণতন্ত্র ফোরাম।
সংগঠনের সভাপতি আ ন ম খলিলুর রহমান ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, তাঁতীদলের আবুল কালাম আজাদ, কাজী মনিরুজ্জামান মনির, ওলামা দলের মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহেদুল কবির, এমজি মাসুম রাসেল প্রমুখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সেক্রেটারি ইসমাঈল হোসেন সিরাজী।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২২
এমএইচ/এএটি