ঢাকা: জার্মান রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২০ এপ্রিল) ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপির বৈঠক সম্পর্কে জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার যে বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) বিএনপির মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ কথাগুলো উনি (রাষ্ট্রদূত) সঠিক বলেননি। আমাদের যিনি বক্তব্য রেখেছিলেন সেই মিটিংয়ের পরে তিনি (আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী) কখনোই এ কথা বলেননি, জার্মান রাষ্ট্রদূতকে কোড করে তিনি কোনো কথা বলেননি। আপনারা সেখানে ছিলেন, আপনারা সবই জানেন। তিনি (আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী) সামগ্রিকভাবে ইনজেনারেল যে কথাটা বলেছেন সেটাই উনি (রাষ্ট্রদূত) মিস কোড করেছেন।
ডিক্যাব অনুষ্ঠানে জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি যে উদ্ধৃতি পড়েছি তা বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। যেখানে বলা হয়েছে, ‘আমি দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি ও গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি’। এমন শব্দ চয়ন সত্য নয়। এ উদ্ধৃতি নিয়ে আমি অসন্তুষ্ট।
গত ১৭ মার্চ গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার।
বৈঠক শেষে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তাদের আলোচনায় দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচন ও মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয় উঠেছে। বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের বিষয়ে জার্মান রাষ্ট্রদূত কী বলেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র সম্বন্ধে বিশ্বব্যাপী সবাই অবগত আছে। এখানে নতুন করে বলার কিছু নেই। এগুলো নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনাও হচ্ছে এটা তো আপনারা জানেন। এসব ব্যাপারে ওনারা কনসার্ন। বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে আলোচনা হচ্ছে, ওনারা তো তার একটা অংশ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, আমেরিকা বলেছে, ব্রিটেন বলেছে, সবাই বলছে। ’
বৃহস্পতিবার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নবগঠিত আংশিক কমিটির সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবন ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহইয়াকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। পরে কবরের সামনে নতুন ছাত্র নেতৃত্ব মুঠবদ্ধ হাত উঁচিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে শপথবাক্য পাঠ করেন। শপথে জিয়া পরিবার ও বিএনপির মর্যাদা রক্ষার অঙ্গীকার করেন ছাত্রদলের নেতারা।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা ড. আসাদুজ্জামান রিপন, ফজলুল হক মিলন, আজিজুল বারী হেলাল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আকরামুল হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সদ্য বিদায়ী সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ ইকবাল হোসেন শ্যামল উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৭ এপ্রিল ফজলুর রহমান খোকন ও ইকবাল হোসেন শ্যামলের নেতৃত্বে ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করে শ্রাবন ও জুয়েলের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেন ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে বিএনপি মহাসচিব আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব তারা অতি অল্প সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে সারাদেশে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে অতীত ঐতিহ্য অনুযায়ী একটি শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে তারা তাদের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখবে এবং সামনের দিকে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাবে। ’
দেশে কোনো সরকার নেই দাবি করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এ সংঘর্ষের (নিউমার্কেট এলাকায়) ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে, আসলে দেশে কোনো সরকার নেই। এ সরকার একটা সম্পূর্ণ ব্যর্থ সরকারে পরিণত হয়েছে এবং তারা এ রাষ্ট্রকেও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তাদের চোখের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টার সংঘর্ষ হয়েছে দুটি পক্ষের মধ্যে। সেটাকে তারা (সরকার) বন্ধ করার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২২
এমএইচ/আরবি