ঢাকা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে এ সরকারের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অবৈধ।
শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে স্মরণসভা ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীতে একটি রেস্টুরেন্টে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা এবং স্বাধীনতা ফোরামের সাবেক সেক্রেটারি মরহুম প্রকৌশলী এম আজিজুল ইসলামের স্মরণসভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে স্বাধীনতা ফোরাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অসুস্থ। তাকে বানোয়াট মামলা দিয়ে ফরমায়েশি রায়ে সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি আদালতে হেঁটে গিয়েছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আজ তিনি গৃহবন্দি। চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিতে বললেও অমনাবিক ও ফ্যাসিস্ট সরকার অনুমতি দেয়নি। আমি দোয়া করি আল্লাহ তাকে সুস্থ করে দিয়ে আমাদের সঙ্গে আবারো আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবেন।
তিনি আরও বলেন, ওয়ান ইলেভেনের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় এসেছিল। আজকে দিনের ভোট রাতে করে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তারা দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণের মাধ্যমে ধ্বংস করেছে। মানুষ ন্যায়বিচার পায় না। তারা বিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করে একনায়কতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা করছে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, এ সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। কারণ এর পেছনে রয়েছে আওয়ামী সিন্ডিকেট। আজকে আওয়ামী লীগের ছেলেরা, ছাত্রলীগ মারামারি করলো আর মামলা খেল বিএনপি নেতারা। এ সরকারের হাত থেকে দেশ রক্ষার জন্য আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাই। যেই আন্দোলনে এ সরকার বিদায় নেবে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন এবং দেশনায়ক তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন।
ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী বলেন, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি তা আজ ভুলুণ্ঠিত। আজকেও শোষণ-নির্যাতন-নিপীড়ন অব্যাহত রয়েছে। নিষ্ঠুর ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করা হয়েছে। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আজকে মানুষ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে না। কথা বলতে পারে না। দেশ চলছে একজনের কথায়। তাই তো মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার নেই। বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হচ্ছে। অনেককে গুম ও খুন করা হয়েছে। বিনা বিচারে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আজকে জাতীয় সরকারের ধোয়া তুলে জনদৃষ্টি ভিন্ন দিকে নেওয়া হচ্ছে। আমরা বলবো বিএনপিতে কোনো বিভেদ নেই। বাংলাদেশের সুস্থতার জন্য এখন দাওয়া প্রয়োজন। সরকার গেছে তেঁতুলতলায়। কিন্তু বিএনপি যাবে না বেল তলায়। আওয়ামী লীগ সুপ্রিম কোর্ট বারের ভোট বাক্স দখল করেছে। তারা দেশের সমস্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। এসব বাঁচাতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে মাঠে নামতে হবে। দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ।
এলডিপির একাংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, যারা জাতীয় সরকারের কথা বলে তারা শেখ হাসিনা তথা সরকারের সুরে কথা বলছে। মূলত সরকারকে তারা সেইফ এক্সিট দিতে চায়। আমরা বলবো- শেখ হাসিনাকে বিদায় করে নির্বাচনের পর সবাইকে মিলে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। এটাই আমাদের লক্ষ্য। যা ইতোমধ্যেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে ও ইশতিয়াক আহমেদ বাবুলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, ওলামা দলের আহ্বায়ক শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, কৃষক দলের খলিলুর রহমান ভিপি ইব্রাহিম, শাহজাহান মিয়া সম্রাট, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আরিফা সুলতানা রুমা, স্বাধীনতা ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাঈদ হাসান মিন্টু, মরহুম এম আজিজুল ইসলামের ছেলে জাওয়াদ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২২
এমএইচ/আরবি