ঢাকা: দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত যুগপৎ আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি-জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও এনডিপির নেতারা।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তিনটি দলের নেতাদের মধ্যে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে তারা এ কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অনির্বাচিত, অবৈধ, ভোটাধিকারহরণকারী, লুটেরা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছি। ইতোমধ্যে প্রথম পর্যায় শেষ করেছি। দ্বিতীয় পর্যায়ে অনেকগুলো দলের সঙ্গে কথা বলা শেষ হয়েছে। আজকে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে আমরা কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়েছি। এই সরকারের পতনের লক্ষ্যে ও পদত্যাগের দাবি, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, আমাদের নেতা তারেক রহমানসহ বিরোধীদলের যেসব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে সেই মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবিতে যুগপৎভাবে আন্দোলন করবো। সেই দাবিগুলো আমরা আজকে আলোচনা করেছি। এরমধ্যে নিত্যপ্রয়োজনী জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ও আছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়, লুটপাটের বিচারের জন্য তদন্ত কমিশন গঠন করার বিষয়ও আছে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (একাংশের) সভাপতি শায়খুল হাদিস আল্লামা মনসুরুল হাসান রায়পুরী বলেন, আজকে বিএনপির সঙ্গে ঐকমত্য হয়েছে বর্তমান অনির্বাচিত অবৈধ সরকারের পদত্যাগের জন্য যুগপৎভাবে আন্দোলন করবো। দেশে আরও সমস্যা আছে যেমন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং লুটপাট, বিদেশে টাকা পাচারের তদন্ত সাপেক্ষে বিচার করা। এসব বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যাতে আগামী নির্বাচন হয় সেই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতেই থাকবে।
ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) একাংশের সভাপতি কারী আবু তাহের বলেন, বিএনপির সাথে চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা একমত পোষণ করেছি যে এই ভোট চোর সরকার আমাদের ভোটের অধিকার হরণ করেছে। শুধু তাই নয় গত ১৪ বছর এই সরকার দুশাসন চালিয়েছে। বিএনপির প্রায় ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে প্রত্যেকটা পরিবারকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। এই হিংসাত্মক রাজনীতি থেকে আমাদের ফিরে আসতে হবে। আপনারা দেখেছেন খালেদা জিয়াকে ২ কোটি টাকার জন্য, যে টাকা ব্যাংকে আছে, লুট করা হয়নি, সেই দুই কোটি থেকে ছয় কোটি হয়েছে। সেই টাকার জন্য ওনাকে বিনা অপরাধে, বিনা কারণে সাজা দিয়ে রেখেছে। তাকে ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছে না। এর অর্থ হলো এই সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে ভয় পায়, খালেদা জিয়া রোডে বের হলে ওনারা আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, এই দেশের মানুষের ভোটের অধিকার এই সরকার কেড়ে নিয়েছে। এরা ২০০৯ সাল থেকে দেশের সব অর্থ সম্পদ বিদেশে পাচার করছে। আর দোষ দেয় বিএনপি টাকা পাচার করছে, ২০ দলীয় জোটের নেতারা টাকা পাচার করেছে। ওনারা বিদ্যুৎ ফেরি করে বিক্রি করার কথা বলে এখন দিনে ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এসব কারণে আমরা একমত হয়েছি, আগামীতে আমাদের চমক আছে। আমরা একটা কথা বলতে চাই, এই সরকারের পতনের দাবিতে, এই নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে এবং এটা আদায় করে ছাড়বো।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, এনডিপি নেতা আবদুল্লাহ আল হারুন, মজিবুর রহমান, মুসা মণ্ডল, জামিল আহমেদ, আলী আকবর, সুলতানা পারভিন, মিজানুর রহমান পাটোয়ারী, আবদুল আজিজ, হাফেজ আবু সাইদ।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম, মাওলানা আব্দুর রহিম ইসলামাবাদী, শায়খুল হাদিস শেখ মুজিবুর রহমান, মাওলানা শহীদুল ইসলাম আনসারী, মাওলানা আবদুল মালিক, মাওলানা আবদুল হক কাওসারী, মাওলানা রশিদ বিন ওয়াক্কাস, মুফতি জাকির হোসাইন খান, মাওলানা আতাউর রহমান খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২২
এমএইচ/এএটি