রাজশাহী: আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হলেও রাজশাহীর এ মহাসমাবেশ সফল করা হবে।
রাজশাহীর একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা মিনু বলেন, রাজশাহী মহানগর, সব জেলা, উপজেলা, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডসমূহের বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, পুলিশি হয়রানি ও গ্রেফতার করা হচ্ছে।
তবে দেশের ছয়টি বিভাগীয় শহরের ইতোমধ্যে মহামসমাবেশ শেষ হয়েছে। সেসব সমাবেশে সরকারের পক্ষ থেকে নজিরবিহীন বাধা দেওয়া, স্থল ও জলের সব প্রকার যানবাহন বন্ধ করে দেওয়ার পরও বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের রুখতে পারেনি। সব বাধা অতিক্রম করে জনগণ গণসমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহীর গণসমাবেশ নিয়েও গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। অন্যান্য বিভাগীয় শহরে এ লক্ষ্যে কোনো প্রকার মামলা হয়নি। সেখানে ব্যাপক পরিমাণে জনসমাবেশ হয়েছিল। তবে সব বিভাগীয় শহরকে ছাড়িয়ে রাজশাহীর মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত করা হবে। এর জন্য তাদের যদি বুক থেকে তাজা রক্ত পিচঢালা পথে ঢেলে দিতে হয়, তাতে নেতাকর্মীরা রাজি আছেন। সব বাধা ও চক্ষু রাঙানিকে উপেক্ষা করে পুরো শহর মানুষে মানুষে ভরে যাবে বলেও দাবি করেন বিএনপির এ সিনিয়র নেতা।
লিখিত বক্তব্যে মিনু বলেন, আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে করার জন্য যখন তারা এ বিভাগের ৮টি জেলা ও ১টি মহানগরীর প্রায় ৬৭টি উপজেলা ও থানায় প্রাথমিকভাবে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন, তখনি রাজশাহীতে সরকার বিএনপির ওপর নতুন মাত্রার অত্যাচার ও নির্যাতনের ফর্মূলা নিয়ে হাজির হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি উপজেলা ও থানায় কর্মীদের বাড়িবাড়ি তল্লাশি করা হচ্ছে। গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। বিভাগে ইতোমধ্যে শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের লোকজন দ্বারা কোথাও অকারণে বোমা ফাটানো হচ্ছে, বোমা রেখে দেওয়া হচ্ছে এবং অতঃপর সাজানো মামলা দেওয়া হচ্ছে। লোকজন জানতেও পারছে না যে কী কারণে মামলা হয়েছে। গত বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় বিভাগীয় সমবেশের প্রস্তুতিমূলক সমন্বয় সভায় পুলিশ অতর্কিত হামলা করে বিনা কারণে ১৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
মিনু বলেন, বিএনপি কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন নয় যে গোপন বৈঠক করবে। এছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নাদিম মোস্তফাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ চট্টগ্রাম, রংপুর, খুলনা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, সিলেট বিভাগীয় সমাবেশে কোথাও বিএপির কর্মীরা কোনো প্রকার গণ্ডগোল করেনি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন ছয়টি বিভাগের প্রতিটি সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘট সরকারি দল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সরকার দলীয় পেটুয়া বাহিনীর হামলা ও আক্রমণের পর এবার রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশের আগে প্রশাসন ও পুলিশের অত্যাচার-নির্যাতন ও ত্রাস এমন এক ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, উপজেলা পর্যয়ে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী এলাকায় থাকতে পারছেন না। মানুষের সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ পর্যন্ত করতে পারছে না। প্রশাসন ও পুলিশের এ রূপ বেআইনি নির্যাতন ও অত্যাচার থেকে বিরত থাকার জন্য সংবাদ সম্মেলন থেকে আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান মিয়া, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি'র সাবেক সভাপতি ও রাসিক সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
এসএস/আরবি