ঢাকা: আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনে জনগণের সাড়া না পেয়ে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা পাগলের প্রলাপ বকছেন।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যশোরের জনসভায় গণমানুষের ঢল আবারও প্রমাণ করেছে দেশবাসী শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি আস্থাশীল। অথচ বিএনপি নেতারা বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন এবং গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে লাগাতারভাবে তাদের চিরাচরিত মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, যেকোনো উপায়ে ক্ষমতা দখলে মরিয়া বিএনপি নেতারা নীতি বিবর্জিত রাজনীতি ও সন্ত্রাসী পন্থা বেছে নিয়েছেন। একদিকে তারা দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। অন্যদিকে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জনমনে ভীতি সঞ্চার এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বিঘ্নে সভা-সমাবেশ করছে। আবার সরকারের বিরুদ্ধে বাধাদানের মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাদের বিদেশি প্রভুদের কাছে রাজনৈতিক অনুকম্পা প্রার্থনা করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে বলেই বিএনপি নেতারা প্রতিদিন সমাবেশের নামে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করতে পারছেন, গণমাধ্যম এবং বাকস্বাধীনতা আছে বলেই মিডিয়াবাজির রাজনীতি চালিয়ে যেতে পারছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃতপক্ষে, এদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতান্ত্রিক আদর্শ ও মূল্যবোধের প্রধান অন্তরায় হলো বিএনপি। বিএনপি সর্বদাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি কখনোই তাদের হাতে লেগে থাকা রক্তের দাগ মুছতে পারেনি, রক্তের নেশা থেকে মুক্ত হতে পারেনি। হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অবৈধ ও অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করে ইতিহাসের নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। রক্তের স্রোত প্রবাহিত করে তিনি দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে চিরতরে মুছে ফেলার অপচেষ্টা চালান।
তিনি বলেন, স্বৈরশাসনের গর্ভে যে রাজনৈতিক দলের উত্থান ও পথচলা তারা কখনই গণতন্ত্রকে ধারণ ও লালন করে না। ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা, ৩ নভেম্বর জেল খানার অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে যারা বর্বরোচিত নৃশংস গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল, তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না।
তিনি আরও বলেন, ২৪ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা এবং লাখ লাখ নেতাকর্মীর ওপর অকথ্য অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে রক্তের হলিখেলায় মেতে উঠেছিল তার। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ এবং নির্বাচন বানচালের নামে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে পেট্রোল বোমা মেরে শত শত নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে বিএনপি। স্বভাবগত কারণেই বিএনপি আন্তর্জাতিকভাবে (কানাডার ফেডারেল আদালত কর্তৃক ঘোষিত রায়ে) স্বীকৃত একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারায় একের পর এক সাফল্যের স্মারক রেখে চলেছে। যার ফলে জনগণের জীবনমানের উন্নতি ঘটছে। ঠিক সেই সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার মিথ্যা অভিযোগ তুলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা কখনো ক্ষমতার মোহে রাজনীতি করেননি। জনকল্যাণের মহান ব্রত নিয়েই তিনি রাজনীতি করে আসছেন। আওয়ামী লীগ কখনোই জনগণের শাসক নয় বরং সেবক।
বাংলাদেশ সময় ১৪১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২২
এসকে/আরএইচ