ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

চাপে পড়ে দ্বিতীয় ম্যাচে জাতীয় সংগীত গাইলেন ইরানের খেলোয়াড়রা?

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২২
চাপে পড়ে দ্বিতীয় ম্যাচে জাতীয় সংগীত গাইলেন ইরানের খেলোয়াড়রা?

ফুটবল বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জাতীয় সংগীত গায়নি ইরানের খেলোয়াড়রা।

সোমবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষের সেই ম্যাচে ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানাতে তারা নীরব ছিলেন।

জাতীয় সংগীত বাজানোর সময় ঠোঁট মেলাননি ফুটবলাররা।

কিন্তু শুক্রবার সেই দৃশ্যপট পাল্টে গেল। ওয়েলসের বিপক্ষে মাঠে নেমে উচ্চস্বরেই জাতীয় সংগীত গাইলেন তারা।

খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে সেদিন ফুটবলারদের নীরব প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন গ্যালারির দর্শকদের অনেকে। তবে আজ খেলোয়াড়দের দেখাদেখি ইরানি সমর্থকরাও সুর মেলালেন।  

ফুটবলাররা যখন জাতীয় সংগীতের সাথে নিজেদের গলা মেলাচ্ছিলেন, স্টেডিয়ামে তখন গ্যালারি থেকেও উচ্চস্বরে ভেসে আসে গান।

উল্লেখ্য, গত দু’মাস ধরে প্রতিবাদী মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে ফুঁসছে ইরান। গত সেপ্টেম্বরে মাথা ঢেকে রাখার বিষয়ে কঠোর নিয়ম ভঙ্গ করার অভিযোগে আটক হন ২২ বছরের মাহশা। নীতি পুলিশের হেফাজতে তার মৃত্যু হয়।  

মাহশার মৃত্যুর প্রতিবাদে এরপর থেকে দেশটিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ থামাতে দমন-পীড়নের পথ অবলম্বন করে ইরানের সরকার। এর পরও দেশে প্রতিবাদ থেমে যায়নি পুরোদমে।

কাতার বিশ্বকাপকে প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে নেয় ইরানি ফুটবলাররা। ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে ইরান অধিনায়ক এহসান হাজসাফি বলেছিলেন, দেশের চলমান বিক্ষোভে তাদের সমর্থন রয়েছে এবং প্রতিবাদকারীদের প্রতি তারা সহানুভূতিশীল। তাই তারা মাঠে জাতীয় সংগীত চলাকালে নীরব থাকবেন।

কিন্তু নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই সেই কথা রাখলেন না তারা।  

এ বিষয়ে ইরানি সমর্থকদের অনেকে মনে করছেন, জাতীয় দল ব্যাপক চাপের মধ্যে পড়েছে। প্রতিবাদকারীদের সমর্থন করার জন্য তারা সমালোচিত হয়েছেন। তাই তারা তাদের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।

যদিও চাপের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ইরান দলের তারকা স্ট্রাইকার মেহেদি তারেমি।

তিনি বলেন, ইংল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচে জাতীয় সংগীত না গাওয়ার পরে খেলোয়াড়রা এ নিয়ে কোন চাপের মধ্যে ছিল না।  

তবে কেন আজ গাইলেন - প্রশ্নে তিনি বলেন, আসলে আমরা এখানে ফুটবল খেলতে এসেছি। শুধু আমরাই নয়, কাতারে উপস্থিত সব খেলোয়াড়ই এখানে ফুটবল খেলতে এসেছে। আমি কিছু পরিবর্তন করতে পারি না। আমার মতো হাজার হাজার মানুষ কিছুই পরিবর্তন করতে পারে না।

এর আগেও বিষয়টি এভাবেই এড়িয়ে গিয়েছিলেন তারেমি।

বৃহস্পতিবার ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি অনুরোধ করেন, দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে তাকে যেন কোনো প্রশ্ন না করা হয়।

ওই সংবাদ সম্মেলনে তারেমির পাশেই বসা ছিলে ইরান দলের ম্যানেজার কার্লোস কুইরোজ।  

সে সময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, এই প্রশ্নগুলি করা আপনাদের অধিকার। তবে আমার দ্ভুত লাগছে বিষয়টি। কারণ, অন্যান্য কোচ এবং অন্যান্য জাতীয় দলের কাছে একই ধরনের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবেন না আপনারা। তাদের দেশে অনেক সমস্যা রয়েছে এবং সারা বিশ্বেই অনেক সমস্যা চলছে।

সূত্র: বিবিসি স্পোর্টস

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ২৫ নভেম্বর, ২০২২
এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।