ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

‘জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ’ কর্মসূচিই যেন সমাবেশ

১৭ বছর পর কমিটি পাচ্ছে গোলাপগঞ্জ ছাত্রলীগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২২
১৭ বছর পর কমিটি পাচ্ছে গোলাপগঞ্জ ছাত্রলীগ

সিলেট: কমিটি বিহীন অবস্থায় ১৭ বছর কেটেছে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের। দেড়যুগেও হয়নি ঢাকাদক্ষিণ সরকারি কলেজ কমিটিও।

অথচ এ সময়ে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের ৩টি কমিটি দায়িত্ব পালন করে বিদায় নিয়েছে। কিন্ত কোনো কমিটিই চক্রভেদ করে গোলাপগঞ্জ ছাত্রলীগের কমিটি করতে পারেনি।

পদপদবীর আশায় থাকা নেতাকর্মীরা এরইমধ্যে আদুভাইদের কাতারে গিয়ে পৌঁছেছেন। চরম হতাশায় অনেকে রাজনীতি ছেড়ে পাড়ি দিয়েছেন প্রবাসে। যারা টিকে আছেন, তারা আর ছাত্রলীগে নেই। ছাত্র রাজনীতি ছেড়ে এখন তারা স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগে যুক্ত হয়েছেন। কেউবা আওয়ামী লীগেও বাগিয়ে নিয়েছেন পদ। কিন্তু ছাত্র রাজনীতি ঘিরে তাদের পদ-পদবীর প্রত্যাশা হয়েছে গুড়েবালি। বর্তমানেও ছাত্র রাজনীতিতে যুক্তদের হতাশার ঘোর অন্ধকার পেয়ে বসেছিল।

অবশেষে সিলেট সভাপতি নামজুল ইসলাম ও সম্পাদক রাহেল সিরাজের নেতৃত্বে সিলেট জেলা ছাত্রলীগ তৃণমূল নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে উদ্যোগ নিয়েছেন। তারা গোলাপগঞ্জের তিনটি ইউনিটকে আরও শক্তিশালী করতে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

এরই অংশ হিসেবে তারা গত শনিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে ছাত্রলীগের পদ-পদবীতে প্রত্যাশীদের কাছ থেকে জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করেছেন।
এদিন প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে। ফলে জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহের কর্মসূচি যেন সম্মেলনে রূপ নেয়।

গোলাপগঞ্জ পৌর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন নাজমুল ইসলাম। রাহেলে সিরাজের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি কিশওয়ার জাহান সৌরভ ও নাঈম আহমদ। সভায় স্থানীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে গোলাপগঞ্জের তিনটি ইউনিটের নেতৃত্বে আসতে ইচ্ছুক ছাত্রলীগ নেতাদের জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ।
এ সময় বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, দীর্ঘদিন কমিটিহীন থাকা গোলাপগঞ্জ উপজেলা পৌর ও ঢাকাদক্ষিণ সরকারি কলেজ ছাত্রলীগে এখন প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। এই আগ্রহ ও উৎসাহ ধরে রেখে যোগ্য নেতৃত্ব বাছাইয়ের মাধ্যমে গোলাপগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করে এগিয়ে নিতে হবে।

জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ উপলক্ষ্যে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে রীতিমতো উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগসহ স্থানীয় বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পরামর্শ করে নেতৃত্ব বাছাই করবেন, জানিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতারা।

কমিটির ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা বলেন, গোলাপগঞ্জ রাজনীতির জন্য সিলেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। এই উপজেলায় সৎ, ত্যাগী এবং যোগ্যতা সম্পন্নদের নেতৃত্বে নিয়ে আসতে পারলে ছাত্রলীগ আরও গতিশীল হবে। আমাদের প্রত্যাশা, সংশ্লিষ্টরা বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন।

সিলেট জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ বাংলানিউজকে বলেন, নেতৃত্বে আসতে ইচ্ছুকদের দুই শতাধিক জীবন বৃত্তান্ত জমা হয়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করে যতদ্রুত সম্ভব গোলাপগঞ্জের তিনটি ইউনিট কমিটি ঘোষণা করা হবে।

সর্বশেষ ২০০৫ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে গোলাপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে খায়রুল হককে সভাপতি ও রুহিন আহমদ খান সাধারণ সম্পাদক হয়ে আসেন। এরপর ২০০৭ সালে রুহিন পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিতে সাধারণ সম্পাদক পদ ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে এম.এ ওয়াদুদ এমরুল সাধারণ সম্পাদকের আসনে বসেন। সেই কমিটির নেতৃবৃন্দ আদুভাইদের কাতারে চলে আসলেও কমিটি বিহীন থেকে যায় গোলাপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২২
এনইউ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।