ঢাকা: ‘প্রযুক্তির উৎকর্ষ যেখানেই পৌঁছাক, ছাপার অক্ষরের সাহিত্য টিকে থাকবে আরও অনেক দিন। উপন্যাস বা আখ্যান জীবনঘনিষ্ঠ কাহিনী নির্ভর, তাই মানুষ আনন্দের খোঁজেই তা পড়বে’—আগামীর পৃথিবীতে ‘উপন্যাস, গল্প তথা আখ্যানের ভবিষ্যৎ’ নিয়ে এভাবেই বলছিলেন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন।
ঢাকা লিট ফেস্টের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠিত ‘আগামীর আখ্যান’ শীর্ষক সেশনে স্বকৃত নোমানের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইমদাদুল হক মিলন ও অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম।
সমসাময়িক ও ভবিষ্যতের মানুষ বিখ্যাত কালজয়ী উপন্যাসগুলোর মতো বড় কলেবরের উপন্যাস ভবিষ্যতেও কেন পড়বে- সঞ্চালকের এই প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, কেন পড়বে তা জরুরি নয় বরং কীভাবে পড়বে তা গুরুত্বপূর্ণ। পড়ার মাধ্যমে পরিবর্তন আসছে, আরও আসবে। তবে যুগে যুগেই কালজয়ী সাহিত্যের সৃষ্টি হবে। বর্তমান সময়ে আমরা দৃশ্য মাধ্যমের প্রাবল্যে পড়ি কম, কিন্তু দেখি বেশি। এর কিছু প্রভাব তো সাহিত্যে থাকবেই। মানুষ তার স্বপ্ন ও সম্ভাবনার প্রতিফলন খোঁজে সাহিত্যে। যাপিত জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা থেকেই আখ্যানের সৃষ্টি হবে এবং মানুষ পড়বে।
সময়ের সঙ্গে বদলে যাচ্ছে আমাদের প্রাত্যহিক ব্যবহারের ভাষার উপাদান ও ধরন। এই বাস্তবতায় বর্তমান সময়ের আখ্যানকার কোন ধরনের ভাষায় লিখবেন- এই প্রশ্নের উত্তরে প্যানেল আলোচকেরা বলেন, পৃথিবী বদলাবে এবং লেখক তার স্বাচ্ছন্দ্য অনুসারেই ভাষার ব্যবহার করবেন। আঞ্চলিকতা, শহুরে উপভাষা, প্রযুক্তিভিত্তিক শব্দ সবই আসবে সাহিত্যে। মৌলিক সাহিত্য সৃষ্টির জন্য সময়কে ধরতে হবে।
নতুন পাঠক সৃষ্টির জন্য রাষ্ট্রীয় কাঠামোর চেয়ে সমাজের দায় বেশি বলে মত দেন আলোচক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম। তার মতে এক্ষেত্রে সত্যিকার শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া, পারিবারিক পর্যায়ে সাহিত্যচর্চার প্রেরণা সৃষ্টি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাহিত্যের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা এই তিনটি বিষয়ে জোর দেওয়া প্রয়োজন।
সেশনের শেষে আলোচকরা লিট ফেস্ট আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এর সাফল্য কামনা করেন। পাশাপাশি ভবিষ্যতে সারা পৃথিবীর বাংলা ভাষাভাষী সাহিত্য ও শিল্পকে সংযুক্ত করে বিশ্ব বাংলা উৎসবের মতো কোনো আয়োজন বাংলাদেশে করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি
এইচএমএস/