ঢাকা: অমর একুশে বইমেলার শহীদ বেদী। তার চারপাশ দিয়ে ঘুরছে পাঁচ মুখোশধারী।
তাদের পিছু পিছু আরও জনা পনের মানুষ। তবে এরা মুখোশধারী নয়। এদের পোশাকেও রক্তের রঙে খচিত বাংলা বর্ণমালা।
অন্যদের মতো উৎসুক দৃষ্টিতে এই বর্ণমালার মৌন মিছিলের দিকে তাকিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হ্যাপি। একসময় মিছিলে অংশ নেওয়া একজনের কাছে কৌতূহল প্রকাশ করলেন তিনি।
উত্তর এলো, বর্ণরা তো আর হাঁটতে পারে না, মানুষের কাছে যেতে পারে না। তবে, মায়ের ভাষায় বর্ণের অস্তিত্ব ও আবেদন প্রকাশে এই বেশ নিয়েছে কিছু শিশু।
তারা সামাজিক সংগঠন ‘লাল’র স্বেচ্ছাসেবী। লাল‘র এই কর্মীদেরই কেউ কেউ সেজেছে বর্ণমালার জন্য তাজা প্রাণ দেওয়া ভাষাসৈনিক, মুখোশধারী ধীর পায়ে হেঁটে চলা ভাষাশহীদ।
পাঁচ শহীদের সাজ নেওয়া ‘লাল’র ক্ষুদে কর্মীরা হলো- রাহী, সাদেকীন, রাতুল, সাদিয়া ও নিলা। সবার বয়সই ১০ থেকে ১৪ বছর।
রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার ও শফিউর সেজে এ পাঁচজন ঘুরে বেড়িয়েছে একুশের বইমেলা। বর্ণে বর্ণে বিলিয়ে দিয়েছে ভাষার ভালোবাসা।
আলাপে জানা যায়, বর্ণকে ছড়িয়ে দেওয়ার বার্তা নিয়ে ‘লাল’ ২০১১ সাল থেকে প্রতিবারেই ছুটে আসে মেলায়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু করে মেলা প্রাঙ্গণের সবার হৃদয়ে তারা দিয়ে যায় মায়ের ভাষার ভালোবাসা।
পুরো মেলায় এই মৌন মিছিলকারীদের নির্দেশনা দেন বশিরুল্লাহ মজুমদার আলো। তিনি জানান, এটি মূলত একটি পারফরম্যান্স আর্ট বা পরিবেশন কলা। পরিবেশন কলা কেবল বাংলাদেশে নয়,বিশ্বশিল্প অঙ্গনেও নতুন মাধ্যম।
এ পরিবেশনায় অংশ নেওয়া নারায়ণগঞ্জের সুমনা আক্তার বলে, আমরা বর্ণের যে অধিকার পেয়েছি, তার আবেগকে জাগিয়ে দিতে এ আয়োজন।
রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) লাল’র ক্ষুদে কর্মীদের এই পরিবেশনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ও আর্ট স্কুলের শিক্ষার্থীরাও। ছিলেন ঢাকা আর্ট কলেজের অনেক শিক্ষকও।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৬
এমআইকে/এইচএ/