বিকেলে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক শরীফ উদ্দিন আহমেদ।
শরীফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্রিটিশ আমলে যে কতিপয় ব্যক্তি বাংলার স্বাধীনতা, ঔপনিবেশিকতার অবসান, জনগণের আর্থ-সামাজিক জীবনের উন্নতি, শিক্ষার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, স্বাধীকার আন্দোলন, বিশেষ করে বাংলার পশ্চাৎপদ মুসলমান সম্প্রদায়ের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় তাদের মেধা, মনন, অর্থ, সময় ও জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী।
তিনি বলেন, টাঙ্গাইলের মতো এক অনগ্রসর ও পশ্চাৎপদ এলাকা থেকে বেরিয়ে এসে তিনি সর্বভারতীয় ব্যক্তিতে রূপান্তরিত হন। যা তার ব্যক্তিগত জীবনের এক মহা অর্জন। তবে তিনি শুধু ব্যক্তি-উন্নতি বা ব্যক্তি-চিন্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না। দেশ, ভারতবর্ষ, ভারতবর্ষের পরাধীন অবস্থা, ভারতবাসী বিশেষ করে ভারতবর্ষের মুসলমান সম্প্রদায় এবং আরো বিশেষ করে পূর্ববাংলার জনজীবন ও স্থানিক উন্নতির জন্য তিনি সারা জীবন উৎসর্গ করে যান। তার অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিবেদিত প্রচেষ্টা পূর্ববাংলার জীবনকে, বিশেষ করে মুসলমান সম্প্রদায়কে আলোকিত ও উন্নত করে।
‘তবে চলার পথ মৃসণ ছিল না- তাকে সম্মুখীন হতে হয় বহু বাধা-বিপত্তির। তিনি একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে নিজেকে উৎসর্গ করেন। তা হলো পূর্ববাংলার মুসলমান সম্প্রদায়ের অগ্রযাত্রা, বিশষে করে পূর্ববাংলার আর্থ-সামাজিক জীবনের উন্নতি। তার মতো মানুষের কৃতীর বিনিময়েই আজকের শিক্ষা-অগ্রসর বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। ’
আলোচকরা বলেন, পূর্ববাংলার উচ্চশিক্ষার ভিত্তি স্থাপনে নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী অবদান কখনো বিস্মৃত হওয়ার নয়। প্রায় শতাব্দীপ্রাচীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তার অবদান ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এ অঞ্চলের উচ্চশিক্ষার ইতিহাস এবং সামগ্রিকভাবে মানব-উন্নয়নের ইতিহাস রচনা করতে গেলে তার অবদান আমাদের কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণে রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম একসূত্রে গাঁথা। তিনি চেয়েছিলেন পূর্ববাংলার মানুষের জীবনের মান যেন উন্নত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে নওয়াব আলী চৌধুরীর ভূমিকা চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল হাসান আব্দুল্লাহ্’র পরিচালানায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ঘাসফুল শিশুকিশোর’-এর পরিবেশনা। এতে সংগীত পরিবেশন করেন রুশিয়া খানম, নবনীতা রায় বর্মণ, এস এম তৌহিদ সরকার এবং বাবু সরকার। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বেণু চক্রবর্তী (তবলা), খোকন বাউল (দোতারা), হোসেন আলী (বাঁশি)।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৭তম দিন। এদিন মেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়েছে।
বিকেলে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে এ কে এম আহসান, খান শামসুর রহমান, মুজিবুল হক শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। আলোচনা করবেন এম মোকাম্মেল হক এবং অধ্যাপক আবদুল মমিন চৌধুরী। সভাপতিত্ব করবেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বাংলাদশে সময়: ২৩৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৮
এইচএমএস/এএ