শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে গ্রন্থমেলার গেটে অসংখ্য শিশুরা অপেক্ষা করছিলো। গেট খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিভাবকদের হাতে ধরে মেলায় আসতে শুরু করে তারা।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা কর্তৃপক্ষ সপ্তাহের দুই দিন শুক্র ও শনিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশুদের জন্য মেলার সময় বরাদ্দ রেখেছে। এ সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছেন অভিভাবকরাও।
অক্ষর চেনে না, বই কি বোঝে না এমন শিশুদেরও বই মেলায় নিয়ে আসতে ভুল করেননি অনেক অভিভাবক। মেলায় আসা এক মা বলেন, ‘বাচ্চার পড়াশুনার সেরকম বয়স হয়নি এখনো। বিভিন্ন ধরনের ফল ফুল পশু-পাখির ছবি দেখে দেখে যেন বলতে পারে, এজন্য বই খুঁজছি। ’
এবারের বইমেলার ৬ষ্ঠ শিশুপ্রহরে গিয়ে দেখা যায়, বাবা মায়ের হাত ধরে বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে বই দেখছে শিশুরা। এক একটি স্টলে ঢুকে রংবেরঙের বই নেড়ে চেড়ে দেখছে তারা। অভিভাবকদের কাছে আবদার করছে পছন্দের বইয়ের জন্য। হাজারো বইয়ের সঙ্গে নিজের সন্তানকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন সচেতন বাবা-মায়েরা।
শৈশব থেকেই বই পড়ার ভিত্তিটা মজবুত করলে বইয়ের মাঝেই খুঁজে পাওয়া যায় অনাবিল আনন্দ। তাই ছেলেবেলা থেকেই সন্তানদের পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে তাদের নিয়ে মেলায় আসা বলে জানালেন অভিভাবকরা।
মেলাতে আসা সরকারি চাকরিজীবী আহমেদ ইশতিয়াক বলেন, শিশুরা একসময় বিদগ্ধ পাঠক হবে, হবে লেখক। হাল ধরবে স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশের। তাই তাদের বইমেলায় নিয়ে এসেছি। মেলাতে পরিচিত হচ্ছে বিভিন্ন লেখকের সাথে। শিশুদের বইমেলায় নিয়ে আসা সকল অভিভাবকের কর্তব্য বলে আমি মনে করি।
ধানমন্ডি থেকে মা শারমিন রহমানের সঙ্গে এসেছিল পাখির মতো সুন্দর টিয়া। কী বই কিনলে- এ প্রশ্নের জবাবে ফোকলা দাঁতের হাসি হেসে বলল, ‘আমি টম অ্যান্ড জেরি, মীনা, ভূতের গল্প, পরীর গল্প, রাক্ষস-খোক্কসের গল্প...’
এভাবে একের পর এক বইয়ের নাম বলতেই থাকে সে। এ সময় পাশে থাকা তার মায়ের হাসিমুখ বুঝিয়ে দিচ্ছিল যে, নিজের বাচ্চাকে এ বইমেলায় নিয়ে আসতে পেরে তিনিও বেশ আনন্দিত।
বিকেলে সব বয়সী পাঠক সমাগমের ঝক্কি এড়াতে শিশুপ্রহরেই সন্তানকে নিয়ে আসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন অভিভাবকরা।
শিশু চত্বরে শিশুদের মূল আকর্ষণ সিসিমপুরের পরিবেশনা। শিশুদের উপস্থিতি একটু বেশিই চোখে পড়ে সিসিমপুর মঞ্চে। প্রিয় চরিত্রগুলোকে দেখতে আগ্রহের কমতি নেই তাদের।
সকালবেলায়ই মেলায় উপস্থিত হয়েছেন কয়েকজন লেখকও। মেলার পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা। আর বিকেলবেলায় সব বয়সী পাঠকের সমাগমে বইমেলা আরো জমজমাট হবে বলে আশা করছেন প্রকাশকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮
এইচএমএস/এমজেএফ