অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের চোখেমুখে রাগ-ক্ষোভ। ড্রেসিংরুমে ফেরার পথটাতে তার সামনে দাঁড়ানো অ্যালান ডোনাল্ডের মুখে হতাশা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচে ঘটে গেছে ইতিহাসের প্রথম ‘টাইমড আউট’। ম্যাথিউসের ওই আউট নিয়ে ডোনাল্ড ক্রিকব্লগ ডট কমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও নিজের হতাশার কথা শুনিয়েছেন। এটি তার পছন্দ হয়নি বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কিংবদন্তি প্রোটিয়া পেসার।
তিনি বলেছেন, "ওই রাতে আমি বিছানায় শুয়ে শুধু ভাবছিলাম, ‘কী হয়ে গেলো ওখানে?’ নিজের কাছে প্রশ্ন করেছি ‘কী হলো এটা?’ এমনকি ড্রেসিংরুমেও আমি মৃত মানুষের মতো চুপচাপ ছিলাম। আমরা শ্রীলঙ্কার সঙ্গে হাত মিলাইনি। আমি যখন মাঠে নামছিলাম, তখন জানতাম কী হবে, কোনো সৌহার্দ্য থাকবে না; সেটাই হয়েছে। "
"যখন ঘটনাটা ঘটল, তখন আমার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল- আমার সহজাত প্রবৃত্তির কারণেই। আমি সত্যিই যেন মাঠে ঢুকে গিয়ে বলি, ‘যথেষ্ট হয়েছে, আমরা এটার পক্ষে দাঁড়াব না। আমরা এই ধরনের দল নই যারা এর পক্ষ নেবে। ’ এটা ছিল আমার তাৎক্ষনিক ভাবনা। "
"এটা (টাইমড আউট) দেখতে হতাশাজনক লেগেছে। আমি সাকিব সুযোগ নেওয়াটা বুঝতে পারছি। তার বক্তব্য, ‘আমি জেতার জন্য সবকিছু করেছি। ’ আমার গলা শুনেই বুঝতে পারছেন, ব্যাপারটা আমার পছন্দ হয়নি... এমন কিছু আমি পছন্দ করি না। যা ঘটেছে তা দেখাটা সত্যিই খুব কঠিন ছিল... শ্রীলঙ্কার সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় সময়ের কারণে কোনো বল না খেলেই আউট হয়ে মাঠ ছেড়ে চলে গেল। "
এর আগে ক্রিকেট ইতিহাসের কোনো ফরম্যাটেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এমন ঘটনা ঘটেনি। ঘুরেফিরেই তাই আসছে ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট’ প্রসঙ্গ। ওই প্রসঙ্গ টানলেন ডোনাল্ডও। এমন কিছু হতে পারে সেটি নাকি বিশ্বাসই হচ্ছিল না তার।
তিনি বলেন, "এই খেলার প্রতি ও একে অন্যের প্রতি সম্মান ও মর্যাদার কথা বলা হয়ে থাকে, ক্রিকেটের চেতনার কথা বলা হয়ে থাকে। আমি এমন জিনিস দেখতে চাই না। এটা কেবল আমার কথা। আমাদের খেলায় এমন কিছু আমি দেখতে চাই না যেখানে... হ্যাঁ, (ফিল্ডারদের) কেউ একজন চটপটে ছিল এবং (সাকিবকে) বলেছে, হ্যাঁ, তুমি আবেদন করতে পারো। ’ আমার তখন মনে হয়েছে, ‘সত্যিই, এটা ঘটতে যাচ্ছে না। এটা হতে পারে না। এটা একদমই হতে পারে না!"
ম্যাথিউজ জানিয়েছেন, তার হেলমেটের সমস্যার কারণে দুই মিনিটের বেশি দেরি হয়েছে। সময়ের মধ্যেই তিনি উইকেটে এসেছিলেন। এ নিয়ে ডোনাল্ড বলছেন, ‘সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হতো এটা শুধু বলা, "ঠিক আছে, চিন্তার কিছুই নেই, বন্ধু। তোমার হেলমেটটা তাড়াতাড়ি ঠিক করে নাও। তোমার হাতে সময় আছে এটা বদলানোর। "
"সবকিছু অনেক দ্রুত ঘটে গেছে। তবে আপনি কর্তৃত্বের কথা যেহেতু বলছেন, আমি তো প্রধান কোচ না, আমি দায়িত্বে নেই। আমি কেবল (আম্পায়ার) মারাইস ইরাসমাসকে বলতে দেখেছি, ‘অ্যাঞ্জেলো, (ম্যাথিউস) দয়া করে তুমি এখন মাঠ ছাড়তে পারো। ’ অ্যাঞ্জেলোকে দেখলাম হেলমেট তুলে নিল এবং এরপর মাঠের বাইরে গিয়ে বিজ্ঞাপনী বোর্ডের দিকে সেটা ছুঁড়ে মারল। আসলে... আমি বিস্মিত হয়েছি। "
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০২৩
এমএইচবি/এমএইচএম