ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পাহাড়খেকোর তালিকা করুন, ব্যবস্থা নেবো: বিভাগীয় কমিশনার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২৩
পাহাড়খেকোর তালিকা করুন, ব্যবস্থা নেবো: বিভাগীয় কমিশনার ...

চট্টগ্রাম: বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেছেন, রেলওয়ে, চসিক ও পরিবেশ তিন সংস্থা সমন্বয় করে অবৈধ দখলদারদের তালিকা করুন। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সংযোগ যারা দিয়েছে, তাদের তালিকা করা হোক।

সবার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাহাড়গুলো দখলমুক্ত রাখা এবং সুরক্ষিত করা মালিকদের দায়িত্ব।
এটি অবহেলা করা যাবে না।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস অনুষ্ঠিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৭তম সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পাহাড়ে যারা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে তাদের হঠাৎ করে সরানো কঠিন। তাই আগে কিছু মানুষকে পুনর্বাসন করতে হবে। এর পর আস্তে আস্তে সবাইকে পাহাড় থেকে সরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। নতুনভাবে কোনো অবস্থাতেই পাহাড়ে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে দেওয়া যাবে না। এজন্য সব সরকারি সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে।

বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সব সরকারি সংস্থা ও দপ্তরের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, পাহাড়গুলো থেকে স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করতে হলে পাহাড়ের মালিকানায় থাকা সংস্থাগুলোকে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিতে হবে। যাদের পাহাড়, তাদের সক্রিয় হতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর শুধু মামলা করলেই চলবে না। তদারকিও করতে হবে। আমার সর্বোচ্চ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারি।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি সেখানে এক বিদেশির পরিদর্শনের জন্য আমাদের কাছে চিঠি আসে। মূলত সেখানকার প্রকল্প নেওয়া জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) থেকে চিঠি দেওয়া হয়। সেখানে রাস্তা হয়েছে। ড্রেনেজ সিস্টেম পর্যন্ত আছে। অবৈধ দখলদের জন্য প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। বাটালি পাহাড়ে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি পৌঁছে গেছে কীভাবে! সেখানে বিদেশি সংস্থার অর্থায়নে কাজও হয়েছে। আমাদের না জানিয়ে, তারা সেখানে প্রকল্প নিয়েছে।

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সেখানে রাস্তা বা ড্রেনেজ ব্যবস্থার প্রকল্পটি আগে নেওয়া হয়েছিল। আমরা সেখানকার মানুষের জন্য শুধু কিছু ফ্যাসিলিটি দিয়েছি। আমরা প্ল্যান করছি, ২০ কাঠা জমিতে একটি আবাসন প্রকল্প নেওয়ার। সেখানে পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণদের এনে পুনর্বাসন করা হবে।

তিনি বলেন, লালখানবাজারের মতিঝর্ণাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে গেছে। এখানে অনেক বছর ধরে মানুষ বসবাস করছে। তাদের উচ্ছেদ করা কঠিন। তারা বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি; সবকিছু পেয়েছেন।

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাস বলেন, আমরা মামলা করি। আসামিরা জামিন নিয়ে বের হয়। অনেক সময় দেখা যায়, প্রকল্প অনেকদূর যাওয়ার পর আমরা খবর পাই। এক্ষেত্রে পাহাড়ের মালিকানায় থাকা সংস্থাগুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে।

পুলিশের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের ডিআইজি নূরে আলম মিনা, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার নিষ্কৃতি চাকমা।

তারা বলেন, পুলিশ নিয়মিত অভিযানসহ সবসময় সহায়তা করে থাকে। প্রশাসন যদি কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়, সেখানেও পুলিশের সমর্থন থাকবে। অবৈধ বসিত কীভাবে ইউটিলিটি সার্ভিস পায়? আমি নিজেও আবেদন করেছি, কত ধরনের কাগজপত্র দিতে হচ্ছে। তারা কীভাবে পায়? নিজেদের সম্পত্তি সুরক্ষার দায়িত্ব সরকারি সংস্থাগুলো। এটি করতে না পারা দায়। এ দায়ও নিতে হবে। আমার বাংলোর নিচে থেকে ২০০ পরিবারকে উচ্ছেদ করেছি। সরকারি সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিক নেতারা অবৈধ বসতি ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা পকেটে ঢোকায়। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এসব পাহাড়ে মাদক, জুয়া, মারামারি হয়। ফলে আইনশৃঙ্খলা অবনতি হয়। সবাই মিলে উচ্ছেদের জন্য একটা ডেডলাইন দেন। আমরা কঠোর হব, আমরা পারব।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২৩
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।