ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের’ চবি শিক্ষককে নিয়ে অপপ্রচার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের’ চবি শিক্ষককে নিয়ে অপপ্রচার ড. শাহাদাত হোসেন।

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ছাত্রলীগ এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনটির সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. ফিরোজ খানম ফারাজি স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাহাদাত হোসেন ১৯৮৮-১৯৯৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বর্তমানে চুয়েট) ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯০ সালে এক অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে নবীনদের পক্ষে বক্তব্যও দেন তিনি।

ছাত্রলীগের হয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে ছিলেন শাহাদাত হোসেন। এছাড়া ১৯৯১ সালে  বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের আক্রমণের শিকার হন তিনি। শাহাদাত হোসেনের বাবা একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তিনি চুয়েট ছাত্রলীগ এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের একজন সক্রিয় সদস্যও।    

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে সবার শীর্ষে আছেন ড. শাহাদাত হোসেন। গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জামায়াতের তকমা লাগিয়ে তাকে নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে।

ড. শাহাদাত হোসেনের সহকর্মীরা জানান, তার বাবা মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান (ওরফে মকছুদ চেয়ারম্যান) বৃহত্তর সাতকানিয়া থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। দীর্ঘ ৩০ বছর সাতকানিয়া সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।  

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পরে আওয়ামী লীগের এক সময়ের সাধারণ সম্পাদক মরহুম আব্দুর রাজ্জাক এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মরহুম সালাউদ্দিন ইউসুফসহ অনেক নেতাকর্মী মাসুদুর রহমানের তৎকালীন গ্রামের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

বাবার আদর্শ ধারণ করে ছেলেও ছোটবেলা থেকে আওয়ামী লীগের ধ্যান-ধারণায় গড়ে উঠেন। ১৯৮৪ সালে ড. মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন গ্রামে ‘অরুণোদয়ের সৈনিক’ নামক একটি প্রগতিশীল সামাজিক সংগঠন গড়ে তোলেন। তখন তিনি এসএসসি পাস করেন।  

১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর পক্ষে প্রফেসর হোসেন প্রতিষ্ঠিত ‘অরুণোদয়ের সৈনিক’ সংগঠনটি সবচাইতে বড় জনসমাগম করে। এইচএসসি পাশ করার পর শাহাদাত হোসেন বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতে ভর্তি হন। সেখানে ১৯৮৮-১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ছাত্রলীগ এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. ফিরোজ খানম ফারাজি।

শাহাদাত হোসেন পরে ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০২ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের ‘ম্যানচেষ্টার ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।  

চবিতে শিক্ষকতার পাশাপাশি বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ বা হলুদ দলের পক্ষে কাজ করেন তিনি। এখনও ওই দলের সক্রিয় সদস্য বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন হলুদ দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সুলতান আহমেদ।

সুলতান আহমেদ বলেন, ফেসবুকে যা লেখা হচ্ছে তা অপপ্রচার। শাহাদাত হোসেন একজন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সমর্থক। তিনি ২০১৪ সালের ডিন নির্বাচনে হলুদ দলের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। এখনও তিনি হলুদ দলের সক্রিয় সদস্য।

শাহাদাত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমার রক্তে আওয়ামী লীগ। গ্রামে ছোটবেলা থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করেছি। চুয়েটে ছাত্রলীগ করেছি। চবিতে জামায়াত-শিবিরের অবরোধ চলাকালে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে ক্লাস নিয়েছি।

তিনি বলেন, যারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা জামায়াত-শিবিরের এজেন্ট। তারা কখনও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ হতে পারে না।  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বাংলানিউজকে বলেন, সরকার যাকে যোগ্য মনে করবে, তাকে উপ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব দেবেন। ফেসবুকে যেসব লেখা হচ্ছে সব অপপ্রচার। যারা যোগ্য তাদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
জেইউ/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।