চট্টগ্রাম: আধুনিক স্থাপত্যকলার অনন্য নিদর্শন জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদ। মসজিদটির নির্মাণশৈলি যে কাউকেই মুগ্ধ করবে।
১৯৭৬ সালে সেনা ভূসম্পত্তির ১২ একর জায়গা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দিলে সেখানে নির্মাণ হয় জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদটি।
চট্টগ্রাম নগরের ওয়াসার মোড় হয়ে আগ্রাবাদ যেতেই হাতের বামে দেখা মিলবে চোখ ধাঁধানো মসজিদটির। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী কমপ্লেক্স। এখানে রয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত বিশাল লাইব্রেরি। পাঁচতলা মসজিদ প্লাজা ও কমপ্লেক্সে একসঙ্গে প্রায় ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। সুপরিসর সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয় মসজিদে। নিচতলায় রয়েছে মুসল্লিদের অজু করার সুব্যবস্থা। তার পাশেই নামাজ পড়ার বিশাল জায়গা। আলো-বাতাসের চলাচলে এক ধরনের শীতলতা বিরাজ করে মসজিদের ভেতরে।
তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় শুক্রবার ছাড়া অন্যান্য দিন তেমন মুসল্লি হয় না। দ্বিতীয় তলায় ইমামের মিম্বর। সেখানেই চলে যান মুসল্লিরা। মূল ভবনের সামনে রয়েছে বিশাল মাঠ। চট্টগ্রামে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় এখানে।
প্রতি রমজানে রোজাদারদের জন্য ব্যবস্থা করা হয় ইফতারের। ধনী-গরিবের বৈষম্যহীন সুবিশাল ইফতার আয়োজনে যোগ দেন অনেকেই। দৈনিক প্রায় ১০০০-১২০০ রোজাদার একসঙ্গে বসে ইফতার করেন এই মসজিদে। ধনী-গরিবের বৈষম্যহীন ইফতারে নগরের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সেখানে সৃষ্টি হয় সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের এক অনন্য পরিবেশ।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো. সেলিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি রমজানে মুসল্লিদের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা রয়েছে। ইফতার সামগ্রী চট্টগ্রামে ধনাঢ্য ব্যবসায়ীরা দিয়ে থাকেন। ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এসব কাজের জন্য মাসব্যাপি ৫ জন বাবুর্চি ও ৫ জন সহকারী রাখা হয়েছে।
জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের খতিব সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আল কাদেরী বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রামের দৃষ্টিনন্দন মসজিদগুলোর মধ্যে একটি জমিয়াতুল ফালাহ। এখানে হাজারও মুসল্লির আগমন ঘটে। মসজিদ কমপ্লেক্সের পাশাপাশি এখানে রয়েছে সুবিশাল লাইব্রেরি। যেখানে পাওয়া যায় ইসলামিক বিভিন্ন গবেষণা ও পুস্তক। জ্ঞান পিপাসুদের জন্য এটি হতে পারে নতুন কিছু জানার স্থান।
তিনি বলেন, সাধারণ সময়ের তুলনায় রমজান মাসে মুসল্লি বেশি থাকে৷ এছাড়া রমজান মাসজুড়ে হাজারও মানুষের ইফতারের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। এসব ইফতার সামগ্রীর যোগান দেন চট্টগ্রামের ধনাঢ্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। এমন মহৎ কাজের সঙ্গে জড়িত থেকে নিজেদের নাম প্রকাশ করতে চান না তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
এমআর/এসি/টিসি